গত তিন দশক ধরে বলিউডে রাজত্ব করছেন শাহরুখ খান। এমনকী আজকের দিনে দাঁড়িয়েও, বলিউডের সবচেয়ে বড় হিট দিয়েছেন শাহরুখ খানই। ২০২৪ সালের জাওয়ান ভারতের বাজারেই পার করে গিয়েছিল ৬০০ কোটির ঘর। এমনকী, বিদেশেও হিন্দি সিনেমাকে পৌঁছে দেওয়ায় শাহরুখ খানের অবদান অপরিসীম।
৯০-এর দশকের শুরুতে দ্রুত উত্থানের পর থেকে, হিটের পর হিট দিয়েছেন শাহরুখ খান। তবে রয়েছে ব্যতিক্রমও। ১৯৯৫ সালে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে এবং করণ অর্জুন-এর মতো দুটো ব্লকবাস্টার দিয়ে বলিউডের এ লিস্টার হয়ে গিয়েছিলেন রাতারাতি। এবং এরপর আসা গুড্ডু-ও ছিল সেমি হিট। রাম জানেও বক্স অফিসে হিট হয়েছিল। ফলত শাহরুখে বাজি ধরতেন সেই সময় অনেক পরিচালক-প্রযোজক।
মুকুল আনন্দের ত্রিমূর্তি-তে জ্যাকি শ্রফ এবং অনিল কাপুরের সঙ্গে তাই শাহরুখ খানকে নেওয়াকে দেখা হয়েছিল দুর্দান্ত স্ট্র্যাটেজি হিসেবে। অ্যাকশন ফিল্মটি ১১ কোটির বাজেটে তৈরি করা হয়েছিল, যা সেই সময়ের যেকোনো ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য সর্বোচ্চ ছিল। এটি শান্তি ক্রান্তি এবং আজুবা-র কাছে থাকা, সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভারতীয় সিনেমা হওয়ার রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছিল।

ত্রিমূর্তি ২২ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ভারতের ইতিহাসে যে কোনো ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য সবচেয়ে বড় ওপেনিং (তখনকার হিসেবে) ছিল। প্রথম দিনে ভারতে ছবিখানা ১ কোটি টাকা আয় করে। উদ্বোধনী সপ্তাহান্তে এই ছবির বিশ্বব্যাপী আয় ছিল ৫ কোটি টাকার বেশি। আর ফলত সকলেই ভেবেছিলেন, শাহরুখ খানকে নিয়ে মুকুল আনন্দের এই জুয়া বুঝি সফল হতে চলেছে।
তবে আচমকাই পরিস্থিতি বদলে যায়। সিনেমার আয় তলানিতে এসে ঠেকে দেখতে দেখতে। আর গায়েব হয়ে যায় প্রেক্ষাগৃহ থেকে। শেষ পর্যন্ত, ভারতে ত্রিমূর্তি সিনেমার চূড়ান্ত আয় ৯ কোটি টাকারও কম ছিল, যা বাজেটের ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, ত্রিমূর্তি সিনেমায় প্রথমে শাহরুখ খান এবং জ্যাকি শ্রফের সঙ্গে সঞ্জয় দত্তের অভিনয় করেছিলেন। কয়েকটি দৃশ্যের শুটিংও করেছিলেন সঞ্জয়। তবে, মুম্বাই বিস্ফোরণ মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর পর, মুকুল আনন্দ এই ভূমিকার জন্য আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে, প্রযোজক সুভাষ ঘাই অনিল কাপুরের কথা বলেন। শোনা যায়, আদিত্য পাঞ্চোলি সেইসময় ফোন করে অনিলকে খুব হুমকিও দিতেন। পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং আদিত্য পাঞ্চোলি ক্ষমা চান।

ত্রিমূর্তি পরিচালক মুকুল আনন্দের শেষ সিনেমা ছিল। এরপর ১৯৯৭ সালে দাস-এর শুটিং করার সময় মারা যান। সেই সিনেমাটি পরে বাতিল করা হয়। ত্রিমূর্তিতে প্রিয়া টেন্ডুলকার, মোহন আগাশে এবং অঞ্জলি জাঠারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। সিনেমাটি অসফল হলেও, এর মিউজিক হিট হয়েছিল। লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের সুর করা, ছয়টি গানের মধ্যে, ভেরি গুড ভেরি ব্যাড এবং বোল বোল বোল চার্টবাস্টারহয়ে যায়।