আজ ১৯শে এপ্রিল। না, আজ ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্মদিন নয়, তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীও নয়। তবুও আপামর বাঙালির কাছে, বাংলা সিনেপ্রেমীদের কাছে স্মরণীয় একটা তারিখ-১৯ এপ্রিল। কারণ এই নামেই তো লুকিয়ে রয়েছে অন্য ধারার বাংলার ছবির জিয়নকাঠি। ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পেয়েছিল ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত 'উনিশে এপ্রিল'। বাকিটা ইতিহাস। এই ছবি প্রথম জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছিল ঋতুপর্ণ ঘোষকে। জাতীয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। তবে এই ছবির পিছনেও লুকানো রয়েছেন অনেক গল্প, অনেক স্মৃতি। রাজার সিংহাসনটা পরে আছে, রাজাই কেবল আজ আর নেই। কিন্তু তাঁর ভালোবাসার মানুষগুলো আজও তাঁকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন, ঋতুপর্নর সিনেমার মধ্যে।
উনেশে এপ্রিলের সুবাদেই বন্ধুত্বটা গাঢ় হয়েছিল প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণ ঘোষের। অপর্ণা সেন, দেবশ্রী রায় অভিনীত মা-মেয়ের সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠা এই ছবিতে উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করেন বুম্বাদা। বাঙালির চেনা পরিচিত সুপারস্টারকে অন্যরকম চরিত্রে খুঁজে পাওয়ার সেই শুরু। সমালোচকদের মতে, অভিনেতা প্রসেনজিতের উত্তরণের যাত্রাপথটা অনেকাংশেই ঋতুপর্ণ কেন্দ্রিক। সেই কথা বারবার মেনে নিয়েছেন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ও। উনেশ এপ্রিল ছাড়াও ঋতুপর্ণ ঘোষের একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি- উত্সব, চোখের বালি, দোসর, খেলা, সব চরিত্র কাল্পনিক, নৌকাডুবি। বলা যায় চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় একে অপরের 'দোসর' প্রসেনজিত্-ঋতুপর্ণ।

আজ আরও একবার 'ঋতু'কে স্মরণ করলেন বুম্বাদা। এদিন ফেসবুকের দেওয়ালে প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় লেখেন, 'তোকে মনে করতে যে আমার আলাদাভাবে কোনো দিন প্রয়োজন পড়ে না সেটা তুই জানিস। তবে এই সময়টা অন্য দিনের তুলনায় তোর কথা একটু বেশিই মনে পড়ছে রে ঋতু। সবটা কিরকম স্তব্ধ হয়ে গেছে। তুই থাকলে হয়তো এই স্তব্ধতাও একটু অন্যরকম লাগত। তুই বরাবরের ম্যাজিশিয়ান ঋতু। ম্যাজিক জানিস বলেই হয়তো ১৯শে এপ্রিলের মত একটা সিনেমা উপহার দিতে পেরেছিলি আমাকে এবং সবাইকে। যেখানে আছিস, ভালো থাকিস। ম্যাজিকটা কিন্তু চালিয়ে যাস'।
সত্যিতো ঋতু কি হারিয়ে যায়? না ঋতু হারায় না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেবল প্রকৃতির রঙ বদলাতে থাকে। বাঙালির মননে, বাঙালির জীবনেও চলচ্চিত্রের ঋতুও তেমনই অবিনশ্বর।
