সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তের পরিসর ক্রমেই বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার এই মামলায় বড়সড় মোড় সামনে এল। সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার সঙ্গে সুশান্তের মৃত্যুর কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা শুরু করল সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল। এই মর্মে এদিন বলিউডের জনপ্রিয় ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি কর্নারস্টোনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। এদিন ডিআরডিও গেস্ট হাউজে প্রায় তিন ঘন্টা করে তদন্তকারী অফিসারদের জেরার মুখে পড়তে হয় বান্টি সচদেবকে। কর্নারস্টোন কোম্পানিতেই কর্মরত ছিলেন দিশা সালিয়ান। এবং এই কোম্পানির তরফেই শ্রুতি মোদীর অনুপস্থিতিতে সুশান্তের ম্যানেজার হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল দিশাকে।বান্টি সচদেব বলিউডের পরিচিত নাম। সলমন খানের ছোটভাই সোহল খানের স্ত্রী সীমা খানের ভাই বান্টি। বান্টি ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলির ম্যানেজার। প্রথম সারির একাধিক তারকাকে ম্যানেজ করেন বান্টি ও তাঁর কোম্পানি। ৮ জুন মধ্যরাতে মুম্বইয়ের এক হাইরাইজের ১৪ তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় দিশা সালিয়ানের। মুম্বই পুলিশের দাবি আত্মহত্যা করেছেন দিশা। এই ঘটনার ৬ দিনের মাথাতেই বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। দিশার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে মাথায় চোট এবং অনন্য আঘাতের কারণে দিশার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এটিকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিজের বাগদত্ত রোহন রয়ের ফ্ল্যাটেই ছিলেন দিশা, যখন এই ঘটনা ঘটে। মুম্বই পুলিশের মতে সুশান্ত ও দিশার মৃত্যুর মধ্যে কোনওরকম যোগসূত্র নেই। ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সমস্যার কারণেই নাকি আত্মহত্যা করেছেন দিশা, সাংবাদিক বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়ে ছিলেন মুম্বই পুলিশের কমিশানার পরমবীর সিং। দিশা সালিয়ানের মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতা নারায়ন রানে। তাঁর দাবি ছিল দিশাকে ধর্ষন করে খুন করা হয়েছে। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দেয় দিশার বাবা সতীশ সালিয়ান। তিনি মুম্বই পুলিশের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন তাঁরা নিজের মেয়ের মৃত্যুতে কোনওরকম ফাউল প্লে দেখছেন না। এবং সংবাদমাধ্যমের একটা অংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিশার মৃত্যুর নিয়ে চাঞ্চল্য এবং মিথ্যা খবর না ছাড়ানোর অনুরোধ জানান। প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর খবর জানবার পর প্রচন্ড চিন্তায় ছিল সুশান্ত, এমনকি এই খবর জানবার পর প্রয়াত অভিনেতাক শরীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিজের বয়ানে এমনটাই জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ পিঠানি, দাবি করা হয়েছে রিপাবলিক মিডিয়ার একটি রিপোর্টে। সিবিআইকে দেওয়া সিদ্ধার্থ পিঠানির বয়ান হাতে এসেছে রিপাবলিক টিভির। পিঠানির মতে, ‘যখন সুশান্ত দিশার মৃত্যুর কথা জানতে পারে, ওর শরীর খারাপ হয়ে যায়। এরপর সুশান্ত উদয়ের সঙ্গে কথা বলে, উদয় কর্নারস্টোন বলে একটা কম্পানির ম্যানেজার। এই কোম্পানির তরফেই দিশাকে সুশান্তের সেলেব্রিটি ম্যানেজার হিসাবে রাখা হয়েছিল যখন শ্রুতি মোদি বেশ কিছুদিনের জন্য অসুস্থ ছিল'।