কেরিয়ারের শুরুর দিকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নানা ভাবে ট্রোলের মুখোমুখি হতে হয়েছিল অনন্যা পান্ডে। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে অনন্যা পান্ডে জানিয়েছেন যে তিনি মানসিক ভাবে কতখানি বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন সেই সময়।
'সমান বুক,মুরগির ঠ্যাং...',স্কুলজীবন থেকেই শরীর নিয়ে ভয়ঙ্কর ট্রোলের শিকার অনন্যা
'কল মি বে' থেকে 'CTRL', 'খো গেয়ে হাম কাহা'-সহ একাধিক সিরিজ ও সিনেমায় অভিনয়ের জন্য নজর কেড়েছেন অনন্যা পান্ডে। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুর দিকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নানা ভাবে ট্রোলের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে অনন্যা পান্ডে জানিয়েছেন যে তিনি মানসিক ভাবে কতখানি বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন সেই সময়।
নায়িকা জানান যে, তিনি কেবল ভেঙে পড়তেন, কাজ করতে চাইতেন না। সম্প্রতি বরখা দত্তের 'উই দ্য উইমেন' অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় করা কটূক্তির মোকাবিলা করার জন্য তাঁকে থেরাপিও নিতে হয়েছিল।
কী কারণে তিনি থেরাপির জন্য গিয়েছিলেন? সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আগে থেরাপি করিয়েছি, তবে এখন আর নিয়মিত থেরাপির প্রয়োজন হয় না। একটা সময় এমন অবস্থা হয়েছিল তখন আমি আমার আবেগকে প্রকাশ করতে পারতাম না। আমি খুব হতাশ বোধ করতাম।’
পাশাপাশি তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর স্যোশাল মিডিয়া কী ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলে না নিয়েো কথা বলেছেন। তাঁর মতে, 'স্যোশাল মিডিয়া মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর ভাবে প্রভাব ফেলে। হয়তো যখন আপনাকে সামাজিক মাধ্যমে কোনও ভাবে ট্রোল করা হয় বা কোনো কটূক্তি করা হয় তখন আপনি সেই ভাবে কিছু অনুভব করেন না। ভাবেন, ‘আমি এখন ভালো আছি, আমার একটি ভালো সময় কাটছে, আমি ব্যস্ত আছি। আমি একটি মন্তব্য পড়ব এবং আমি সেটা উপেক্ষা করব। তবে এটা অবচেতনে থেকে যায়। হয়তো কয়েক সপ্তাহ পরে, এটা আপনার অবচেতনে এসে আপনাকে কষ্ট দেবে। আর এখানেই থেরাপি সাহায্য করে। থেরাপির মাধ্যমে, আমি কেবল আমার অনুভূতিগুলি একত্রিত করতে এবং আমার মনের ভাব আরও ভালো ভাবে প্রকাশ করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কথা বলা সহজ নয়। জনসমক্ষে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কথা বলতে এখনও অনেকে দ্বিধাবোধ করেন।’ স্যোশাল মিডিয়াতে করা কোন ট্রোলে বা মন্তব্যে তিনি সবচেয়ে বেশি বিব্রত হয়েছিলেন? জানতে চাওয়া হলে অনন্যা বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমার সম্পর্কে এত কিছু বলা হয়েছে যে, আমি সত্যিই জানিনা তাঁর মধ্যে থেকে কোনটা সব থেকে খারাপ হিসবে বেছে নেব। যখন আমি আমার কেরিয়ার শুরু করেছিলাম তখন কেউ একটি জাল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন, তারপর দাবি করেন যে সে আমার সঙ্গে একই স্কুলে পড়তেন, তিনি জানান যে, আমি নাকি আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছি। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম, কেউ এটা বিশ্বাস করবে না। তা হয় না, পরিবর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন এটা সত্যিই আমার আত্মবিশ্বাসকে নাড়া দিয়েছিল। সেই সময় আমাকে নিয়ে এমন সব মন্তব্য করা হয়েছিল যে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকতে চাইছিলাম না।’
তিনি তাঁর স্কুল জীবনের ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, 'আমি যখন স্কুলে ছিলাম, তখন আমাকে কুঁজো থেকে শুরু করে সমান বুক, মুরগির পা, লোমশ সহ নানা কথা বলা হত। কিন্তু সেটা একটা ছোট্ট জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এইগুলো বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে। আর সেটাই সব থেকে ভয়ের জায়গা।'