লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে ওড়িশায়। প্রায় ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককে ক্ষমতাচ্যুত করতে মরিয়া বিজেপি। এই অবস্থায় ঘন ঘন ওড়িশায় গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির প্রথম সারির নেতারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফের ওড়িশায় গিয়ে দাবি করলেন, এবার ওড়িশায় বিজেডি সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী। তিনি দাবি করেছেন, এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ওড়িশায় ১৫ টি আসন পাবে। অন্যদিকে, বিধানসভা নির্বাচনে ১৪৭ টির মধ্যে ৭৫ টিতে জয়ী হবে বিজেপি।
আরও পড়ুন: মমতা, লালু না স্ট্যালিন…INDIA জোটের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী নিয়ে অমিত শাহর কটাক্ষ
শুক্রবার রাউরকেলা শহরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে শাহ বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচন হল নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী করার এবং মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক এবং বিজু জনতা দলকে (বিজেডি) ক্ষমতাচ্যুত করে ওড়িশায় একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার নির্বাচন।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘ওড়িশায় এবার পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে। ১৫ জনের বেশি সাংসদ এবং ৭৫ জন বিধায়ক নিয়ে ওড়িশায় শাসন করবে বিজেপি।’
অমিত শাহের পরামর্শ, উন্নয়নের জন্য এখানকার জনগণের উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ডবল ইঞ্জিন সরকারকে ভোট দেওয়া। শাহের অভিযোগ, পট্টনায়কের অধীনে ২৪ টা বছর নষ্ট হয়েছে ওড়িশায়। বিজেডি সরকার ওড়িশার পশ্চিম অংশের সঙ্গে সৎ মায়ের মতো আচরণ করছে। ওড়িশা সরকারকে নিশানা করে শাহ বলেন, ‘এখানে ২৭ লক্ষ পরিবারের পাকা বাড়ি নেই। ২৬ লক্ষ বাড়িতে পানীয় জলের সুবিধা নেই। ৬ হাজারের বেশি গ্রামে খারাপ রাস্তা রয়েছে এবং কৃষকদের আয় অনেক কম।’ তাঁর প্রতিশ্রুতি বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের কৃষকদের সাহায্য করতে ৩,১০০ টাকা দরে সরকার ধান সংগ্রহ করবে ।
এদিনও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পট্টনায়কের সরকারের নিন্দা করেন শাহ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওড়িশার মানুষ এবং লক্ষ লক্ষ জগন্নাথ ভক্ত পুরী রত্ন ভাণ্ডারের চাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছেন। নবীন পট্টনায়ককে উত্তর দেওয়া উচিত রত্না ভাণ্ডারের আসল চাবিগুলি কোথায়?’ এদিনও অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে জগন্নাথ মন্দিরের বন্ধ থাকা চারটি দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। অমিত শাহের অভিযোগ, ’নবীন বাবুর অধীনে অফিসাররা সরকার চালাচ্ছেন, এবং আদিবাসীরা তাদের জমি হারাচ্ছেন।’
অমিত শাহের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পট্টনায়ক ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজ্যের বিরোধী নেতাদের এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রচারের বক্তৃতাকে ‘অপমানজনক’ এবং ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি অমিত শাহকে ‘রাজনৈতিক পর্যটক’ বলে নিশানা করেছেন।