সময়টা ভালো যাচ্ছে না ভারতীয় অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার পর মাঠে তাঁর ফর্ম খুবই খারাপ। এবার তার মাঝেই বড় বিতর্কে জড়ালেন তিনি। মাঠে মাথা গরম করায় বড় শাস্তির মুখে পড়লেন তিনি। আইপিএল ২০২৫-এ চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ব্যাটে ও বলে বেশ নিষ্প্রভ ছিলেন অশ্বিন। এবার তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ (TNPL)-এও বিতর্কে জড়ালেন ভারতীয় অভিজ্ঞ ক্রিকেট।রবিবার (৮ জুন), কোয়েম্বাটুরের শ্রী রামকৃষ্ণ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দিন্ডিগুল ড্রাগনস বনাম তিরুপুর তামিঝানস ম্যাচে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অশ্বিনকে ম্যাচ ফি-র ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। দিন্ডিগুল অধিনায়ক অশ্বিনকে দুইটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন ম্যাচ রেফারি অর্জুন কৃপাল সিং। আম্পায়ারদের প্রতি অসন্তোষ প্রদর্শন এবং সরঞ্জামের অপব্যবহার। এক TNPL কর্মকর্তা Cricbuzz-কে বলেন, ‘ম্যাচের পর একটি শুনানি হয়েছিল। অশ্বিন আম্পায়ারদের প্রতি অসন্তোষ দেখানোর জন্য ম্যাচ ফি-র ১০% এবং সরঞ্জামের অপব্যবহারের জন্য ২০% জরিমানা গুণেছেন। তিনি এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।’ঘটনা ঘটে ম্যাচের পঞ্চম ওভারের শেষ বলের ঠিক আগের বলে, যখন তিরুপুর অধিনায়ক আর সাই কিশোরের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন অশ্বিন। বলটি প্যাড লাইনে রেখে বড় শট খেলতে গিয়ে মিস করেন অশ্বিন। বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে বলে মনে হলেও, আম্পায়ার কৃতিকা আউট দেন, যার ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন অশ্বিন।দিন্ডিগুল তখন পর্যন্ত তাদের রিভিউগুলি ব্যর্থভাবে ব্যয় করে ফেলেছিল, তাই ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (DRS) নেওয়ার সুযোগ ছিল না। রিভিউ না পেয়ে অশ্বিন রাগান্বিতভাবে আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে যান ও কিছু কথা বলেন। আম্পায়াররা কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও অশ্বিন উত্তেজিত হয়ে পড়েন।অশ্বিন এরপর মাঠ ছাড়ার সময় প্যাডে ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন ও ডাগআউটের কাছাকাছি গ্লাভস ছুঁড়ে ফেলেন। ডাগআউটে বসেও তিনি আম্পায়ারদের প্রতি চিৎকার করেন এবং তাঁর অঙ্গভঙ্গিও ছিল অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। ম্যাচে তিনি ওপেন করতে নেমে ১১ বলে ১৮ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ২টি চার ও ১টি ছয়। তবে তাঁর আউটের পর দল ৩৯/১ থেকে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে — বাকি ৯টি উইকেট পড়ে মাত্র ৫৪ রানে। দিন্ডিগুল শেষ পর্যন্ত ১৬.২ ওভারে মাত্র ৯৩ রানেই অলআউট হয়ে যায়।তিরুপুর তামিঝানস এরপর সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। উইকেটকিপার ব্যাটার তুষার রাহেজা অপরাজিত ৬৫ রান করে দলকে জয় এনে দেন, ৪৯ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় তিরুপুর।এই জয়ের মাধ্যমে তিরুপুর দল তাদের আধিপত্য দেখিয়েছে, অন্যদিকে দিন্ডিগুল দুই ম্যাচে এক জয় ও এক হারে পয়েন্ট তালিকায় পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে।তিরুপুরের বোলাররা ছিল দুর্দান্ত। এশাকিমুথু ৪ উইকেট ও সাই কিশোর ২ উইকেট নিয়ে দিন্ডিগুলের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন। দিন্ডিগুলের হয়ে একমাত্র উল্লেখযোগ্য স্কোর আসে শিভমের ব্যাট থেকে – ৩০ রান। দলের মাত্র তিনজন ব্যাটারই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পেরেছেন।অশ্বিনের জন্য এটি আরও হতাশার কারণ, কারণ আইপিএল ২০২৫-এ চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে মাত্র ৯ ম্যাচে ৭টি উইকেট ও ৩৩ রান করেছেন। এমনকি তাঁকে একাধিক ম্যাচে দল থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল — এমন একজন খেলোয়াড় যিনি ২০০৯ সালেই CSK-এর হয়ে আইপিএল যাত্রা শুরু করেছিলেন।