প্রয়াত হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি অল-রাউন্ডার মাইক প্রোক্টর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচারে জটিলতা দেখা দেওয়ার পর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় প্রাক্তন প্রোটিয়া তারকার। শেষমেশ শনিবার প্রোক্টরের পরিবারের তরফে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয় সংবাদমাধ্যমে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
মোটে ৭টি টেস্টের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার হওয়া সত্ত্বেও প্রোক্টরকে কিংবদন্তিদের সঙ্গে একাসনে বসানো হয়। আসলে বর্ণবাদ জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকা খেলাধুলোর আসর থেকে দীর্ঘদিন নির্বাসিত থাকায় নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার দীর্ঘায়িত করা সম্ভব হয়নি প্রোক্টরের পক্ষে।
বর্ণবাদ পরবর্তী অধ্যায়ে প্রোক্টর ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের প্রথম কোচ। অর্থাৎ ক্রিকেটার ও কোচ, উভয় ভূমিকাতেই দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের সেবা করেন প্রোক্টর। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭টি টেস্ট খেলেন এই ডানহাতি অল-রাউন্ডার। ২৫.১১ গড়ে ২২৬ রান করার পাশাপাশি ৪১টি উইকেট নেন তিনি।
আরও পড়ুন:- ILT20 Champion MI: ক্যাপ্টেন পুরানের ব্যাটে বাজিমাত, ক্যাপিটালসকে হারিয়ে আইএল টি-২০ চ্যাম্পিয়ন এমিরেটস
প্রোক্টরের ফার্স্ট ক্লাস কেরিয়ার অত্যন্ত ঝকঝকে। তিনি ৪০১টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে মাঠে নেমে প্রায় ২২ হাজার (২১৯৩৬) রান করেছেন। ৪৮টি সেঞ্চুরি ও ১০৯টি হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ২৭১টি লিস্ট-এ ম্যাচে মাঠে নেমে ৬৬২৪ রান সংগ্রহ করেছেন প্রোক্টর। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৫টি সেঞ্চুরি ও ৩৬টি হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ১৪১৭টি উইকেট রয়েছে প্রোক্টরের ঝুলিতে। লিস্ট-এ ক্রিকেটে তিনি নিয়েছেন ৩৪৪টি উইকেট। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে যে, তিনি কতবড় অল-রাউন্ডার ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশতই বিস্তর প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়ানো সম্ভব হয়নি প্রোক্টরের।
আরও পড়ুন:- Manoj Tiwary Retirement: বর্ণোজ্জ্বল কেরিয়ারে ইতি! মনোজের সেরা ১০ কৃতিত্ব
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মাইক প্রোক্টর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনও হারের মুখ দেখেননি। যে সাতটি টেস্টে তিনি মাঠে নামেন, তার ৬টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন প্রোক্টর। ১টি টেস্ট ড্র হয়।
প্রোক্টরের কোচিংয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে। পরবর্তী সময়ে আইসিসির ম্যাচ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রোক্টর। ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার অন্যতম ম্যাচ রেফারি ছিলেন প্রোটিয়া তারকা। শুধু ক্রিকেটার, কোচ এবং ম্যাচ রেফারি হিসেবেই নয়, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবেও কাজ করেছেন প্রোক্টর। ডারবানে নিজের বাসভবনের কাছেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। প্রোক্টর রেখে যেন স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে।