২০২২ সালের অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে কেএল রাহুল ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে নেই। তবে চলতি আইপিএলে তাঁর পারফরমেন্সকে সামনে রেখে কেভিন পিটারসেন বলেছেন ভারতীয় দল তাদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টিমে কেএল রাহুলকে ফেরাক।
কেএল রাহুলকে নিয়ে গম্ভীর-আগরকরকে বিশেষ পরামর্শ দিলেন পিটারসেন (ছবি ANI Photo)
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ২০২৫-এর আসর শেষ হয়ে গেলে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নির্বাচকরা পরবর্তী বড় মিশনের কাজে নামবেন। ভারতীয় দলের লক্ষ্য এবার ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের এত কাছাকাছি সময়ে নতুন মুখের আবির্ভাবের সম্ভাবনা কম, ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পরিচিত কিছু পুরনো মুখ এবং কিছু সীমিত বিকল্পের মধ্যে। যদিও বিসিসিআইয়ের নির্বাচক কমিটির হাতে এখনও কিছু মাস সময় আছে সম্ভাব্য কম্বিনেশন নিয়ে চিন্তা করার জন্য, তার আগেই দিল্লি ক্যাপিটালসের মেন্টর কেভিন পিটারসেন কেএল রাহুলকে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ফেরানোর পক্ষ সমর্থন করলেন।
২০২২ সালের অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে কেএল রাহুল ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে নেই। এমনকি গত বছর আইপিএলে ৫০০ রানের মরশুম করার পরও তিনি ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। তবে চলতি আইপিএলে তাঁর পারফরমেন্সকে সামনে রেখে কেভিন পিটারসেন বলেছেন ভারতীয় দল তাদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টিমে কেএল রাহুলকে ফেরাক।
পিটারসেন বললেন, ‘আমি কেএল রাহুলকে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে চার নম্বরে ব্যাট করাতাম। আমার মনে হয় তোমাদের প্রচুর ওপেনার আছে। সূর্যকুমার যাদব আছে ওপরে, আরও অনেকে আছে। কিন্তু কেএল রাহুল যেভাবে এখন ব্যাট করছে, ও আমার প্রথম পছন্দ হবে চার নম্বরের জন্য, উইকেটকিপার হিসেবেও।’
২০১৬ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জার্সিতে আইপিএলে আলোচনায় আসা রাহুলের অন্যতম সেরা মরশুম ছিল ২০১৮, যেখানে তিনি ১৫৮.৪১ স্ট্রাইক রেটে ৬৫৯ রান করেছিলেন। এরপরের ছয় মরশুমের মধ্যে পাঁচবার তিনি ৫০০ রানের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন, তবে তার স্ট্রাইক রেট ১৩০-র আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল, যা বদলে যাওয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চাহিদার সঙ্গে খাপ খাচ্ছিল না। এর ওপর পঞ্জাব কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়কত্বের চাপও তার ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটের ওপর প্রভাব ফেলেছিল।
তবে ২০২৫ সালে, নেতৃত্বের দায়িত্ব ছাড়ার পর, রাহুল নিজের সহজাত, মুক্ত স্টাইলে ফিরে এসেছেন। যদিও সংখ্যাগত দিক থেকে তা পুরোপুরি প্রতিফলিত না হলেও, কঠিন চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু কন্ডিশনে তার ৭৭ ও অপরাজিত ৯৩ রানের ইনিংস উল্লেখযোগ্য হয়ে রয়েছে।
পিটারসেন আরও বলেন, ‘গত বছরের মাঝামাঝি থেকে কেএল রাহুল ইতিবাচক মানসিকতায় ক্রিকেট খেলছে। আমরা দেখেছি কিভাবে সে ভারতের হয়ে কয়েকটি ম্যাচ শেষ করে ফিরেছে এবং দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। আমি ওর সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে অনেক গভীর, গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছি। ছোটবেলা থেকে যখন ওর মতো কোনও ক্রিকেটার বড় হয়, তখন তাকে শেখানো হয় ডিফেন্সিভ খেলা, এলবো আপ করে খেলা, ‘ভি’-এর মধ্যে ব্যাট চালানো। কিন্তু তিরিশের কোঠায় এসে হঠাৎ করে নতুন ফরম্যাটের জন্য নিজেকে বদলাতে হয়, যেখানে খেলার ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে — এটা ভীষণ কঠিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ও যেভাবে নিজের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছে এবং যেভাবে নিজেকে বদলে নিয়েছে, তা তার চরিত্রের প্রকৃত মাধুর্যকে প্রকাশ করে। ওর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি — প্র্যাকটিস, ট্রেনিং, খেলার প্রতি চিন্তাভাবনা এবং আলোচনা — সবই দারুণ। এটাই কেএল রাহুল।’