ভোটার তালিকায় 'ভূত' খোঁজার কাজ চলছে জোরকদমে। আগামী ডিসেম্বর (২০২৫) মাস পর্যন্ত সেই কাজ চলবেও। তার মধ্যেই বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাসেই সাংগঠনিক নেতৃত্বে বড়সড় রদবদল করতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অন্তত এমনই দাবি সামনে আসছে।
জানা গিয়েছে, গত বছরের (২০২৪) সেপ্টেম্বর মাসেই সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে একটি বিস্তারির প্রস্তাব দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, পৌষ মাসে সেই কাজ নাকি সম্পন্ন করতে চাননি মমতা। যদিও, পরবর্তীতে এ নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা হয়েছে দলের অন্দরে। এখন শোনা যাচ্ছে, পয়লা বৈশাখের পরই সেই সাংগঠনিক রদবদলের কাজে হাত দিতে পারে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - ভোটার তালিকার সমস্ত ত্রুটি খুঁজে বের করার কাজের সঙ্গে সমান তালেই সমান্তরালভাবে দলের মূল সংগঠনের কাজেও গতি আনা হবে। সেই কারণেই নতুন বছরে নতুন মুখেদের মূল সাংগঠনিক নেতৃত্বে তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সেই কাজের প্রস্তুতিও সম্পূর্ণ সেরে রেখেছেন।
প্রাথমিকভাবে এই রদবদল করা হতে পারে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটিগুলির নেতৃত্বে। এছাড়াও, রাজ্য়ের প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে সাংগঠনিক বিশ্লেষণের কাজ করা হবে। অন্যদিকে, এর আগে 'ভূতুড়ে' ভোটার খোঁজার কাজের জন্য গত ১৫ মার্চের ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় আলাদা করে যে সাংগঠনিক কাঠামো তৈরির কথা বলেছিলেন, তাও আগামী পয়লা বৈশাখের আগেই তৈরি করা হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর, তারপরই দলের মূল সাংগঠনিক কমিটিগুলিতে রদবদলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সূত্রের দাবি, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে রেখেছেন অভিষেক।
আরও জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে যাঁদের নিযুক্ত করা হবে, তাঁরা শুধুমাত্র সেই কাজেই মনোনিবেশ করবেন। এর জন্য জেলা, ব্লক ও অঞ্চলস্তরে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে এবং তার জন্যই আলাদা করে কমিটি গঠন করা হবে। যে কাজ আগামী পয়লা বৈশাখের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, যাঁরা দলের মূল সাংগঠনিক কমিটিগুলিতে থাকবেন, তাঁদের কাজ হবে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করা। এক্ষেত্রে সমস্ত স্তরের রদবদল প্রক্রিয়া আগামী জুন মাসের মধ্যেই সেরে ফেলতে চাইছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, অভিষেক সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে মমতাকে প্রস্তাব পাঠানোর পর দলের বিধায়কদের কাছ থেকেও এই বিষয়ে লিখিত পরামর্শ নিয়েছেন মমতা। দফায় দফায় আলোচনা করেছেন রাজ্য সভাপতির সঙ্গে। শোনা যাচ্ছে, সার্বিক পর্যালোচনার পর প্রায় অর্ধেক জেলারই দলীয় সভাপতি বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্য়েই নেওয়া হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু, ব্লক ও টাউনস্তরে যে রদবদল করা হবে, তার জন্য জেলা নেতৃত্ব ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হতে পারে।