উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের প্যারীচরণ সরকার রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। সন্দেহ, তাঁর মৃত্যু হয়েছে গিলেন বা সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে। কী দেখে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা? কী ঘটেছিল তাঁর? এই মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উঠছে উদ্বেগ।
মঙ্গলবারই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গিলেন বা সিনড্রোমের ওপর তারা নজর রাখছে। এবিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব নাপায়ণ স্বরূপ নিগম বেশ কিছু তথ্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ১৫ বছর বা তার নিচের বয়সীদের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। তিনি জানান, রোগ নতুন নয়। রাজ্যে আগেও ছিল গিলেন বা সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে, আমডাঙা ব্লকের বেড়াবেরিয়া পঞ্চায়েতের টাবাবেরিয়ে গ্রামের বাসিন্দা দ্বাদশের ওই পড়ুয়ার শারীরিক অস্বস্তি শুরু হয়েছিল ২২ জানুয়ারি রাতে। দম্পতির একমাত্র ছেলে ওই দ্বাদশের পড়ুয়া। ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পড়ুয়া তাঁর মাকে জানান, গলায় ব্যথা অনুভব করছেন তিনি। পরিবারের সকলে মনে করেন, সাধারণ ঠান্ডা লেগে, এমনটা হয়েছে। রাতে তাঁর জ্বর আসার কারণে ওষুধ খেয়ে ছিলেন ওই পড়ুয়া। পরের দিন সকালে ঘুম ভেঙে উঠে দুই হাতে আর জোর পাচ্ছিলেন না বলে জানা যাচ্ছে। একথা শুনে তাঁকে তড়িঘড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁর মা। রিপোর্ট বলছে, নাবালিক চেয়ারে বসে থাকা অবস্থাতেই পড়ে গিয়েছিল। যে কোনও মায়ের কাছেই সন্তানের এমন অসুস্থতার দৃশ্য ভয়াবহ। এরপর পরিবার আর কাল বিলম্ব করেনি। চিকিৎকের পরামর্শ বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই পড়ুয়াকে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় তাঁর চিকিৎসাও।
হাসপাতালের তরফে পরিবারকে জানানো হয় কলকাতার ভালো হাসপাতালে যাতে ভর্তি করা হয় ওই পড়ুয়াকে। ধীরে ধীরে শরীর অচল হতে থাকে। জানা যাচ্ছে, এতটাই দুর্বল হয়ে যান ওই পড়ুয়া যে, রাতে খাবার ক্ষমতা ছিল না। শুক্রহার রাতেই তাঁকে সিসিইউকে ভর্তি করা হয়। তারপরও ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকেন তিনি। মৃতের মা জানিয়েছেন, হাসপাতালের তরফে একটি ইংজেকশন দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হাসপাতালে ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি। এরপর সোমবারই তাঁর মৃত্যু হয়। ‘সংবাদ প্রতিদিন’র খবর অনুযায়ী, ওই পড়ুয়ার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ এ জিবিসের কোনও উল্লেখ নেই।