কলকাতা শহরের রাজপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। এই দৃশ্য দেখেছেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খোঁজ নিয়েছেন এবং কথা বলে তাঁদের থেকে জানতে পেরেছেন, রাস্তায় সরকারি–বেসরকারি বাসের দেখা নেই। তাই তাঁরা অপেক্ষা করছেন বহুক্ষণ। তারপরই গত বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে গণপরিবহণের হালের তথ্য তুলে ‘সাইলেন্ট ডিপার্টমেন্ট’ বলে ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। তাঁর ধমকের মুখে পড়ে যান রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই সোমবার পথে নামছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে আগামীকাল, সোমবার পরিবহণ সচিবকে সঙ্গে নিয়ে শহরের রাজপথে নামছেন পরিবহণমন্ত্রী। তখনই তিনি সরেজমিনে দেখে নেবেন বাস এবং মিনিবাসের হাল–হকিকত। এই বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘দু’মাস আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একটা বৈঠক হয়েছিল। পথে নেমে মানুষ যাতে সরকারি বাস পান, নানা রুটে ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তারপর সমীক্ষা করে কলকাতা লাগোয়া ৩৫টি রুটকে চিহ্নিত করে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়। আটটি নতুন রুট চালু করা হয়। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো অফিস টাইমে শহরের নানা প্রান্তে গণপরিবহণের অবস্থা সরেজমিনে দেখব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন কবে? ব্রিটিশ সাংসদকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মহম্মদ ইউনুস
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, মন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে বৃহত্তর কলকাতা জুড়ে আটটি নতুন রুট চালু করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে বাসের ট্রিপ এবং সংখ্যা। তবে পর্যাপ্ত বাস এবং চালক–কন্ডাক্টরের অভাব আছে। অনেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁদের শূন্যস্থান পূরণ হয়নি। তার জেরে সিএসটিসি’র হাতে এখন আছে ৬০০ বাস। কিন্তু ৪০০–এর বেশি বাস চালানো যাচ্ছে না। জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ বাড়লেও ভাড়া বাড়েনি। তাই নিগমের আয়ও বাড়েনি। রাজ্য সরকার আগে কর্মীদের বেতন দিত। চলতি আর্থিক বছর থেকে বেতনের ৯০ শতাংশ দেয়। বাকি টাকা স্বল্প আয় থেকে রক্ষণাবেক্ষণ এবং নানা খরচ মেটাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম। তাই বাস বাড়ালে অতিরিক্ত তেলের খরচ ও চালক–কন্ডাক্টারদের ওভারটাইমের টাকা কোথা থেকে আসবে?