গুজরাট-ভিত্তিক একটি সংস্থাকে কালিগঞ্জ উপনির্বাচনের ওয়েবকাস্টিংয়ের জন্য চুক্তি দেওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার সংস্থাগুলিকে বঞ্চিত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই অভিযোগ খারিজ করল নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে গুজরাতের সংস্থাকে বরাত, বাংলাকে বঞ্চনা? সরব ফিরহাদ
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিইও মনোজ কুমার আগরওয়াল বলেছেন, সমস্ত নিয়ম মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটিতে কোনও অনিয়ম হয়নি। আগরওয়াল বলেন, কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারে একটি ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী, আহমেদাবাদের সংস্থাটিকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। বুধবার রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় দাবি করেছেন যে বাংলার কোম্পানিগুলিকে উপেক্ষা করে গুজরাটের সংস্থাকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও একই অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুলেছেন।
নির্বাচন কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ওয়েবকাস্টিংয়ের জন্য বাংলার একটি সংস্থাকে চুক্তির বরাত দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন প্যানেলের নিয়ম না মানার জন্য এবং নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ১.৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে সেই সংস্থাকে। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ওই কর্তা প্রশ্ন তোলেন, একটি সংস্থা কীভাবে বছরের পর বছর ধরে চুক্তিটি পেতে থাকে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ওয়েবকাস্টিংয়ের জন্য নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়নি। জানা যায়, ওই সংস্থাটি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য দায়িত্ব পেয়েছিল। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। একই ছবি বারবার দেখানো হয়েছে, অথবা ওয়েবকাস্টিংয়ের সময় স্ক্রিন ফাঁকা বা কালো হয়ে ছিল। জরিমানা হিসাবে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য তাদের থেকে ১.৫ কোটি টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিধানসভায় রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেন, উপনির্বাচনের কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে গুজরাতের একটি সংস্থাকে। তবে সেই টেন্ডারে অংশ নেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের সংস্থাগুলিকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কমিশন বাংলার সংস্থাগুলিকে কেন উপেক্ষা করল? তাই নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। মন্ত্রী জানান, নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তি বা লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য নির্বাচন কমিশন টেন্ডার ডেকেছিল। সেখানে একাধিক বাঙালি সংস্থা টেন্ডার জমা দিলেও চূড়ান্ত বরাত যায় গুজরাতের এক সংস্থার হাতে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি।