বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এজলাসে বসে বৈঠক করেন বিজেপির আইনজীবী সংগঠনের সদস্যরা। আদালতের কর্মীরা তাঁদের সেখানে বৈঠক না করতে অনুরোধ করলে আইনজীবীদের কয়েকজন তাঁদের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। শুক্রবার সকালে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কানে আসে।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম
আদালতকক্ষের ভিতরে রাজনৈতিক বৈঠক করায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের তীব্র ভর্ৎসনার শিকার হলে বিজেপির আইনজীবীদের সংগঠন। এমনকী আদালতের কর্মীরা ওই বৈঠকে বাধা দেওয়ায় তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আদালতের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে বলে বিজেপির আইনজীবীদের সংগঠনকে তিরস্কার করেছেন প্রধান বিচারপতি। সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টার পর কলকাতা হাইকোর্টের সমস্ত এজলাস বন্ধ করে দেবেন কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এজলাসে বসে বৈঠক করেন বিজেপির আইনজীবী সংগঠনের সদস্যরা। আদালতের কর্মীরা তাঁদের সেখানে বৈঠক না করতে অনুরোধ করলে আইনজীবীদের কয়েকজন তাঁদের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। শুক্রবার সকালে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কানে আসে। এর পর এজলাসে বসে তিনি মন্তব্য করেন, গতকাল যা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দাজনক। কোর্ট রুমের ভিতরে তাদের বৈঠক করতে দিতে হবে বলে রেজিস্ট্রার জেনারেলের ঘরে গিয়ে কয়েকজন আইনজীবী হুমকি দিয়ে এসেছেন। এজলাসে একটি রাজনৈতিক বৈঠক হয়েছে বলেও খবর পেয়েছি। আদালতের ভিতরে রাজনৈতিক বৈঠক করে আপনারা আদালতের পবিত্রতা নষ্ট করেছেন। এটা অত্যন্ত নিন্দাজনক ঘটনা। ভবিষ্যতে যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। এই ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য’।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আদালতে দাঁড়িয়ে কেউ আদালতের কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন এটা মেনে নেওয়া যায় না। আদালতে কেউ নিরাপদ বোধ না করলে তিনি যাবেন কোথায়? এই কাজ যারা করেছে তাদের কয়েকজনের নাম আমি জানতে পেরেছি। তাদের মধ্যে আইনজীবী ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজেশ সাহা ছিলেন। আর কারা এই কাজ করেছেন আজ রাতের মধ্যে তাদের নাম আদালতে জমা দিতে হবে। দরকারে বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠাব’। বিষয়টি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আদালতের মন্তব্য নিয়ে বিজেপির আইনজীবী সংগঠন কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে। তাদের কারও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি একাধিক রাজনৈতিক কোন্দলের আখড়া হয়ে উঠেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যাতে অভিযুক্ত একাধিক রাজনৈতিক দল। এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস অবরোধ ও এজলাসের বাইরে পোস্টার সাঁটার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। এবার কাঠগড়ায় বিজেপির আইনজীবীদের সংগঠন। নামের তালিকা হাতে পেলে দোষী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি কোনও কড়া পদক্ষেপ করেন কি না সেটাই দেখার।