টলিউড-বলিউডে মিলবে অভিনয়ের সুযোগ! তাও আবার সরাসরি প্রোডাকশন হাউস থেকেই পাওয়া যাবে ডাক! এভাবেই স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে উঠতি তরুণ-তরুণীদের ফাঁদে ফেলা হত। আর এই সুযোগ নিয়েই হাতিয়ে নেওয়া হতো লক্ষ লক্ষ টাকা। সবমিলিয়ে ১০০ এর বেশি তরুণ তরুণীকে ফাঁদে ফেলে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল কলকাতায়। অবশেষে সেই চক্রের পান্ডা এক রূপান্তরকামীকে গ্রেফতার করল নেতাজিনগর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম হেনা। (আরও পড়ুন: BSF-এর জালে ২ হিন্দু সহ ৫ বাংলাদেশি, অনুপ্রবেশকারীদের ফেরানো হল নিজেদের দেশে)
আরও পড়ুন: অনলাইনে কয়েক কোটির 'প্রতারণা', ইডির জালে শিলিগুড়ির যুবক, মধ্যরাতেই বসল আদালত
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার নেতাজিনগর এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে অফিস ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছিল এই অভিনব প্রতারণার কারবার। চক্রের কৌশল ছিল বেশ নিখুঁত। নানা জায়গায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার চালানো হতো যে একটি বড় প্রোডাকশন হাউস থেকে নতুন সিরিয়াল ও সিনেমার জন্য মুখ খোঁজা হচ্ছে। নামী পরিচালক কাজ করছেন, বড় বাজেটের প্রোজেক্ট, আর তাতেই দরকার নতুন মুখ, বিশেষ করে কিশোর, কিশোরী ও তরুণ প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। বিজ্ঞাপনে যোগাযোগের নম্বরও দেওয়া থাকত।বহু আগ্রহী তরুণ তরুণী ফোন করে যোগাযোগ করলে, একে একে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হতো। চলত ফটোশুট, অ্যাঙ্গেল টেস্ট, একাধিক ধাপে চলত অডিশন। সবকিছু এতটাই বাস্তব ও গুছিয়ে করা হতো যে কেউই সন্দেহ করেননি। (আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ না মিটিয়ে কি ফের আদালতে রাজ্য? মামলা নিয়ে সামনে এল বড় দাবি)
বিশ্বাস তৈরির জন্য মাঝে মাঝে নামী প্রযোজক বা পরিচিত অভিনেতাদেরও হাজির করা হতো সেই অফিসে। তাঁরা উপস্থিত হয়ে হবু তারকাদের উৎসাহ দিতেন। ফলে সন্দেহ জাগেনি কারও মনে। এরপরই সামনে আসতে থাকে আসল উদ্দেশ্য। ওই অফিস থেকে বলা হত, কাজ পেতে হলে কিছু খরচা আছে। এই যুক্তিতে চাওয়া হতো কয়েক লক্ষ টাকা। কেউ ৫ লক্ষ, কেউ বা ১০ লক্ষ পর্যন্ত দিয়ে দেন। সিনেমার ক্ষেত্রে চাহিদা ছিল আরও বেশি। কিন্তু টাকা দেওয়ার পর ধীরে ধীরে শুরু হতো টালবাহানা। কেউ কাজের খবর পাননি। ফোনও বন্ধ, আর এক সময় সেই অফিসও গায়েব হয়ে যায়। তখনই তরুণ তরুণীরা বুঝতে পারেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল ভারতীয়কে, পরে ভুল বুঝে ব্যক্তিকে দেশে ফেরাল BSF)
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতাজিনগর থানায় প্রথমে ৫৮ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ে। পরে তদন্তে জানা যায়, মোট প্রতারিতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে একশো। আর প্রতারণার অঙ্ক ছুঁয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। অভিযোগ, শুধু কলকাতাই নয়, শহরতলি ও জেলার নানা জায়গা থেকেও টাকা আদায় করেছিল এই চক্র।অবশেষে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত হেনাকে গ্রেফতার করেছে। আরও কারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত, কারা বাইরে থেকে সাহায্য করছিল? সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ মনে করছে, প্রতারিতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।