উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত জনজীবন। তিস্তা, মহানন্দা, জলঢাকা-সহ একাধিক নদীতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় নদী সংলগ্ন এবং নিচু এলাকাগুলিতে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটেই আজ উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন রাজ্যের সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। তাঁর সফরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ সামাল দিতে একাধিক পদক্ষেপ নিল নবান্ন।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ নবান্নের, কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য
উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ পরিস্থিতির মোকাবিলায় নবান্নের তরফে গঠন করা হল বিশেষ দল। আইএএস অফিসার-সহ সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে মোট ৮ সদস্যের এই দল গঠন করা হয়েছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দুশান্ত নারিয়ালা। দলে রয়েছেন কৃষি দফতরের সচিব ওঙ্কার সিং মিনা, পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথান, স্বাস্থ্য দফতরের সচিব শুভাঞ্জন দাস এবং পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ডিরেক্টর (এইচআর) অভিজিৎ লাটুয়া। এছাড়াও, জনস্বাস্থ্য কারিগরি এবং সেচ দফতরের উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের তিনজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে রাখা হয়েছে এই দলে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সকালে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ আধিকারিকদের থেকে বিশদে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। একইসঙ্গে সমস্ত বিভাগকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করার নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশেই দ্রুত এই টিম গঠনের পর উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন সদস্যরা।
এদিকে, রাজ্যের সেচমন্ত্রী বুধবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছনোর পর সরাসরি চলে যান বালাসা নদী সংলগ্ন দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে। সেখানকার পরিস্থিতি দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে কোনও গাফিলতি চলবে না। সাধারণ মানুষের পাশে রাজ্য সরকার রয়েছে। আগামী তিনদিন সেচমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলা দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবেন। পাশাপাশি তিনি দুর্গত এলাকাগুলিতে ঘুরে দেখে ত্রাণ কার্য, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও উদ্ধার কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন বলেও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী কয়েকদিন উত্তরবঙ্গে আরও বৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে, নদী সংলগ্ন ও নিচু এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে। জরুরি ত্রাণ শিবির ও চিকিৎসা পরিষেবার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও প্রশাসনের দাবি।