কলকাতা শহর থেকে ট্রাম তুলে দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে করা যাচ্ছে না। কলকাতা হাইকোর্ট কল্লোলিনীর ঐতিহ্য বজায় রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে। তাই ট্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে মন খারাপ হয়েছিল সকল বাঙালির। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর মন ভালও হয়ে যায় সকলের। তবে অধিকাংশ রুটে ট্রাম চলাচল এখনও বন্ধই আছে। এখন শুধুমাত্র শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা এবং গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা—দুটি রুটে যাত্রীবাহী ট্রাম চলে। তবে এবার নতুন রূপে ট্রামকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলেই খবর।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরই এমন ভোলবদল বলে মনে করা হচ্ছে। আর তাই ট্রাম এবার ‘জয়রাইড’ হিসাবে কলকাতার রাজপথে চলবে। যাতে থাকবে একটি বগি, দুটি ইঞ্জিন। পরিবহণ দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘জয়রাইড’ হিসেবে এবার ট্রাম ব্যবহার করা হবে। যাতে কলকাতার ঐতিহ্যও থাকল এবং আইনও মানা হল। যদিও ‘জয়রাইড’ একাধিক রুটে চলবে না। এটি চলবে একটি মাত্র রুটে। এই ‘জয়রাইড’ চলবে ধর্মতলা থেকে ময়দান হয়ে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত। এই ট্রামের বগির আগে এবং পিছনে দুটি ইঞ্জিন থাকার কারণে ঐতিহ্যবাহী যানবাহনকে ঘোরাতে হবে না। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোতে এই ‘জয়রাইড’ তৈরি হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: দাউদাউ করে জ্বলছে বাইপাসের গ্যারেজ, বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের জেরে তুমুল আলোড়ন
একদা এই ট্রাম কলকাতার রাজপথের মাঝখান দিয়ে টিংটিং ঘণ্টা বাজিয়ে ছুটে চলত। যদিও এখন সেসব অতীত। পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতায় ট্রাম চলত ২৭–২৮টি রুটে। সেটা কালের গতিতে কমে গিয়েছে। কাঠের আসনে বসে জানালা দিয়ে শহর দেখতে দেখতে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে একটা নস্টালজিয়া ছিল। অফিসযাত্রীদের অনেককেই এই ট্রামের মান্থলি কাটতে দেখা যেত। অফিস ফেরতা দেখা যেত, শেষ আসনে বসে চিনে বাদাম ভাজার খোসা ছাড়িয়ে গল্পে মশগুল হয়ে সফর করতে। ক্লান্তি এভাবেই কাটত অনেকের। এখন তা আর নেই। সেটাই এবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।