আদালতের নির্দেশে রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে ছট পুজো রুখতে পুলিশবাহিনী নিয়োগ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার সকালে তাই শহরের দুই বড় জলাধারে পুণ্যার্থীর ভিড় চোখে পড়েনি। গত বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো পালনের উপরে কলকাতা হাই কোর্টের জারি করা নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, শহরের আর এক ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত সুভাষ সরোবরের ক্ষেত্রেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাই কোর্টের বিভৈাগীয় বেঞ্চ। দুই জলাধারে ছট পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পরিবেশবিদরা। শুক্রবার দুপুরে রবীন্দ্র সরোবরকে আড়াল করে তৈরি করা ব্যারিকেড জোর করে অতিক্রমের চেষ্টা করেন একদল পুণ্যার্থী। তাঁদের তাড়া করে সরিয়ে দেয় পুলিশ। রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে শীতে বহু পরিযায়ী পাখির সমাবেশ হয়। তা ছাড়া স্থায়ী বাসিন্দা পক্ষিকুলও সেখানে রয়েছেষ পক্ষিবিদ সুদীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘চার বছর পরে রবীন্দ্র সরোবরে ডজন খানেক পেইন্টেড স্টর্ক এসেছে। তারা হ্রদের মাছের দ্বীপে বাসা বেঁধেছে। এ বছরে এখনও পর্যন্ত ১২২ প্রজাতির পাখি এই সরোবরে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক হেডেড কাক্কুশ্রাইক, ওয়ান লেগডবাজার্ড, চেঞ্জেবল হক ঈগল, সুইনহো’জ মিনিভেট, পায়েড হ্যারিয়ার ও ব্রাউন হেডেড গাল। ২০১৮-২০১৯ সালে ছটপুজোয় আতসবাজির দাপটে বেশ কিছু প্রজাতির পাখি এখান থেকে মুছে গিয়েছিল। আশা করি শনিবার সকালে তেমন কোনও বেআইনি ঘটনা ঘটবে না।’হিন্দিভাষীদের ভোট নিশ্চিত করতে সব জেনেও চোখ বুজে রয়েছে প্রশাসন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে এমনই অভিযোগ এর আগে তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। তা সত্ত্বেও শহরের দুই বৃহত্তম সরোবরে ছট পুজো পালনের তাগিদে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্ট এবং পরে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয় কলকাতা পুর নিগম। সেই আবেদন নাকচ করে দুই আদালতই।দ্দেশে বার্তায় এ বছর বাড়িতেই ছট পুজো পালনের জন্য আবেদন জানান মমতা। ছট পুজোর জন্য গত কয়েক দিনে বেশকিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাধারও তৈরি করেছে প্রশাসন। প্রসঙ্গত, পরিবেশ দূষণ রোধে ২০১৮ সালে রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে গ্রিন ট্রাইবুনাল। সেই রায় বহাল রাখে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রতি বছর রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোয় পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে। অবাধে জলাধারে বর্জ্য ফেলা ও আতসবাজি ফাটানোর ধুম লেগে যায়। সে কারণেই এবার কড়া নির্দেশ জারি করেছে আদালত।