স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মন্দারমণির হোটেলগুলির অনেকগুলিরই বেনামে মালিক তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা - মন্ত্রী - বিধায়ক। বহু ছোট – বড় তৃণমূল নেতার কালো টাকা নামে - বেনামে মন্দারমণির রিসর্টগুলিতে খাটে। তাই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সৈকত দখল করে একের পর এক রিসর্ট তৈরি হলেও কেউ বাধা দেয়নি।
Ad
কল্যাণের দাবি মন্দারমণির হোটেল তৈরি হয়েছে ২০০৯ পর্যন্ত, উপগ্রহ ছবি বলছে অন্য কথা
মন্দারমণিতে ১৪০টি হোটেল ভাঙার গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হোটেল মালিকরা। তাঁদের হয়ে মামলা লড়ছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন আদালতে কল্যাণবাবু দাবি করেন, মন্দারমণিতে সৈকত ঘেঁষে হোটেল ও রিসর্টগুলি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে। যদিও উপগ্রহ চিত্র বলছে অন্য কথা। সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বছর বছর লাফিয়ে বেড়েছে সৈকত দখল। এমনকী কী ভাবে হোটেলগুলি সৈকত দখল করেছে তাও স্পষ্ট সেই ছবিতে।
গুগল ম্যাপের পুরনো ছবি বলছে, ২০১১ সালে মন্দারমণিতে হোটেল ও রিসর্টের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। কিন্তু তার পর থেকে বছর বছর লাফিয়ে বাড়তে থাকে হোটেলের সংখ্যা। ২০১১ সালের আগে গুগল ম্যাপের স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়নি। ফলে তখন পরিস্থিতি কী ছিল তা স্পষ্ট নয়।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মন্দারমণির হোটেলগুলির অনেকগুলিরই বেনামে মালিক তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা - মন্ত্রী - বিধায়ক। বহু ছোট – বড় তৃণমূল নেতার কালো টাকা নামে - বেনামে মন্দারমণির রিসর্টগুলিতে খাটে। তাই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সৈকত দখল করে একের পর এক রিসর্ট তৈরি হলেও কেউ বাধা দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ হলেও বেপরোয়া মন্দারমণিতে বিনিয়োগকারীরা। এখনও সেখানে নির্মিয়মান রয়েছে বেশ কয়েকটি রিসর্ট।
শুক্রবার মন্দারমণির হোটেল ভাঙার ওপর ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এর পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মন্দারমণিতে কোনও হোটেল বেআইনি নয়। সেগুলি পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদের থেকে অনুমতি নিয়ে তৈরি। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে হোটেলগুলি তৈরি হয়। তখন এই আইনই ছিল না। তাহলে সেই আইন কী করে এই হোটেলগুলির ওপর কার্যকর হতে পারে?’ তিনি বলেন, ‘তাছাড়া আইনে উল্লেখ রয়েছে, কোনও বিধিভঙ্গ হলে ৬ মাসের মধ্যে অভিযোগ জানাতে হবে। ২০০৯ সালে তৈরি হোটেলের জন্য ২০১৯ সালে জানানো অভিযোগ কী করে বৈধ হতে পারে?’ যদিও গুগলের উপগ্রহ ছবি বলছে অন্য কথা।