কলকাতার খিদিরপুর অগ্নিকাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তোলা অভিযোগের জবাব দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, 'নারকেলডাঙা থেকে খিদিরপুর, কিংবা হাওড়ার মঙ্গলাহাট - ঝুপড়ি এলাকাগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পিছনে একটাই কারণ রয়েছে! তা হল, অত্যন্ত মূল্যবান ওই জমিগুলি দখল করা!' শুভেন্দু যুক্তি ছিল, 'ওই জায়গাগুলি কিছুদিন ফাঁকা পড়ে থাকবে। তারপর সেখানেই প্রোমোটিং হবে!'অর্থাৎ - এককথায় বলতে গেলে খিদিরপুরের অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। 'ম্যান মেড ফায়ার' নিয়ে একই সুর শোনা গিয়েছিল সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের গলাতেও।আজ (বৃহস্পতিবার - ১৯ জুন, ২০২৫) বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই সমস্ত অভিযোগ একবাক্যে খারিজ করে দেন ফিরহাদ। প্রসঙ্গত, এর আগে এ নিয়ে বিধানসভায় সরব হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যার জবাবে এদিন ফিরহাদ মন্তব্য করেন, 'আগুন ধরার পর সেই জায়গাতেই প্রমোটিং হয়েছে, এমন ঘটনা কলকাতা তথা রাজ্যের কোথাও ঘটেনি। আগুনের পর সেই জায়গাতেই একটা বড় বিল্ডিং তৈরি হয়েছে, এমন দৃষ্টান্তও নেই। উলটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন দিতে গিয়ে সমস্যায় (জায়গা সংক্রান্ত) পড়তে হয়েছে!'উল্লেখ্য, এর আগে শুভেন্দুর তোলা অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। আর এদিন বিধানসভার উল্লেখ পর্বে এই ইস্যুটি উত্থাপিত হতেই জবাব দিলেন ফিরহাদও।মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বাংলায় গত ১৪ বছরে অগ্নিকাণ্ডের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১৫০ জনের। বর্তমানে সারারাজ্যে ১৩০টি দমকলকেন্দ্র রয়েছে। চলতি বছর (২০২৫) এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র কলকাতাতেই ১২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী আগে বলেছিলেন, জাতীয় পরামর্শদাতা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ মোট ২,০০০ দমকলকেন্দ্র থাকা উচিত।বিরোধীরা অগ্নিকাণ্ডের জন্য সরকার ও প্রশাসনের 'ব্যর্থতা'কে দায়ী করলেও ফিরহাদ এদিন বলেন, 'ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। শুধু সরকারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।' এই ধরনের ঘটনার জন্য আমজনতার অসচেতনতাকেও দায়ী করেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী।