স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তথ্য যাবে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট পোর্টালে। ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দিয়ে ভোট কেনার সংস্কৃতি আনার চেষ্টা হচ্ছে দেশে। যা বিপজ্জনক। প্রধানমন্ত্রীর বলা সেই ‘রেওড়ি সংস্কৃতি’ ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। ছবি সৌজন্য–এএনআই।
আবার কেন্দ্র–রাজ্যের সংঘাতের আবহ তৈরি হল। রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইল মোদী সরকার বলে অভিযোগ। আর তা নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সামাজিক প্রকল্পে হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত ঘিরে বাংলার মা–বোনেরা ক্ষেপে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, মেধাশ্রী–সহ রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প চালাতে এক টাকাও দেয় না কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যই প্রকল্পগুলির সম্পূর্ণ খরচ বহন করে। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত, এসব প্রকল্প খাতে রাজ্য কত টাকা খরচ করছে সেটার হিসেবও তুলে দিতে হবে নির্দিষ্ট পোর্টালে। সুতরাং রাজ্য সরকারের নিজস্ব সামাজিক প্রকল্পের উপরেও এবার সরাসরি নজরদারি চালাতে চায় নয়াদিল্লি।
কেন এমন সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের? রাজ্য সরকার দু’ধরনের প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠায়। আবার কয়েকটি প্রকল্প কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা পায়। তবে বহু সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একক উদ্যোগে চালু করেছে। খরচ জোগানো হচ্ছে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির হিসেব এতদিন জমা পড়ত কেন্দ্রের কাছে। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য পরবর্তী কিস্তির টাকা অনুমোদন করে কেন্দ্র। কিন্তু যে প্রকল্পে কেন্দ্রের কোনও আর্থিক সহায়তা নেই, তার হিসেব চাওয়া সরাসরি রাজ্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছে নবান্ন। কেন্দ্র মনে করছে, তাদের দেওয়া টাকা রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্পে কাজে লাগানো হচ্ছে। তাই এমন নজরদারির সিদ্ধান্ত।
ঠিক কী জানিয়েছে কেন্দ্র রাজ্যকে? নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেসব প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো হয়, তার যাবতীয় হিসেব ‘ডিবিটি ভারত’ নামক একটি পোর্টালে তুলে দিতে হবে রাজ্যকে। এই পোর্টালেই পৃথকভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির খরচের হিসাবও নথিভুক্ত করতে হবে। আর যুক্তি হিসাবে বলা হয়েছে, হিসাব পেলে প্রকল্পগুলির জন্য রাজ্যের উপর ঋণের বোঝা কতটা বাড়তে পারে, তার একটা স্পষ্ট হিসেব পাওয়া যাবে।