শ্রেয়সী পাল২০ দিন ধরে ২ বেলা পেট ভরে খাবার জোটেনি। খাবারের দাবিতে বুধবার পথ অবরোধ করলেন মুর্শিদাবাদের ডোমকল পুর এলাকার কয়েকশ’ বাসিন্দা। প্রায় ৩ ঘণ্টা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।বুধবার সকালে লকডাউন ভেঙে বহরমপুর – ডোমকল রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন প্রায় ৪০০ পরিবার। যাদের অধিকাংশেরই মুখে ছিল না মাস্ক। আর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের তো বালাই নেই। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন পুরপ্রধান। সেখানে তিনি স্বীকার করেন, সরকারি নিয়ম মেনে বিতরণ হচ্ছে না চাল ও আটা। সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারের ৫ কিলোগ্রাম করে চাল ও ৫ কিলোগ্রাম করে আটা পাওয়ার কথা.রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, রাজ্যে খাদ্যশস্যের কোনও ঘাটতি নেই। সরকারের গুদামে ৯.৪৫ লক্ষ মেট্রিকটন শস্য মজুত রয়েছে। চালকলে মজুত রয়েছে আরও ৪ লক্ষ মেট্রিক টন। যা দিয়ে অগাস্ট মাস পর্যন্ত রাজ্যবাসীর খাবারের অভাব হবে না। সঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে চাল কেনে না। আমরা সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে চাল কিনি। মন্ত্রী জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে দোকান না খোলায় ও নির্দেশমতো খাদ্যশস্য না দেওয়ায় ইতিমধ্যে কয়েকজন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, রেশন ডিলার দুলাল সাহা গত ২ সপ্তাহে পরিবার পিছু ১ কিলো করে চাল দিয়েছেন। যাতে ৪ – ৫ জনের পরিবারের পেট ভরা সম্ভব নয়। এখানকার অধিকাংস বাসিন্দা ভিনরাজ্যে মজুরি করেন। লকডাউনের জেরে তাদের আয় বন্ধ। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার নাকি গরিবদের খাবার দিচ্ছে। তা আমাদের এখানে সে সব দেখতে পাচ্ছি না কেন?সুবোধ দাস নামে আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘সরকার আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না। তাহলে কি আমরা না খেয়ে মরব? লকডাউন ভেঙে জড়ো হওয়ায় যে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে তা আমরা জানি। কিন্তু এছাড়া আর কোনও পথ ছিল না আমাদের সামনে।’ডোমকলের পুরপ্রধান জফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডোমকলে মোট ১.৫৭ লক্ষ মানুষের বাস। তাদের মধ্যে ৬৯ শতাংশই দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন। আমাদের কাছে ৪২ ক্যুইন্টাল চাল এসে পৌঁছেছে। আরও চাল আসছে।’ অভিযুক্ত রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে জানিয়েছেন, অভুক্ত পরিবারগুলি ১০ কিলোগ্রাম চাল ও ৫ কিলোগ্রাম করে আলু পাবে।