এর আগে ডিএ আন্দোলনকারীদের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল বাম এবং কংগ্রেস নেতাদের। তবে এই দফায় শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী গিয়ে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী শুভেন্দু দাবি করেছেন, খোদ অমিত শাহ তাঁকে নির্দেশ দেন যাতে ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে থাকেন তিনি।
ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শুভেন্দু (ফাইল ছবি)
আজ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল ডিএ আন্দোলনকারীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে আসন্ন মধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে সেই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হলে মার্চ মাসে ধর্মঘটে নামা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মীদের সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ডিএ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি হয়েছে। মাঝে ডিএ আন্দোলনের তেজ কিছুটা কমে গিয়েছিল। তবে ফের নতুন করে ডিএ আন্দোলনকারীরা পথে নেমেছেন। অনশন করছেন ৪ জন। আজকে ১০ম দিনে পড়ল তাঁদের অনশন। এরই মধ্যে অসুস্থ হয়েছেন চারজনই। এরই মাঝে গতকাল ভাস্কর ঘোষের গলায় যেন শোনা যায় কতকটা 'অভিমানের সুর'। জানান, একমাত্র বিরোধী দলনেতা ছাড়া কোনও নেতা বা কেউ তাঁদের খোঁজ নেননি। (আরও পড়ুন: কলকাতা হাই কোর্টের দুই বিচারপতির 'সংঘাত' প্রসঙ্গে কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?)
উল্লেখ্য, এর আগে ডিএ আন্দোলনকারীদের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল বাম এবং কংগ্রেস নেতাদের। তবে এই দফায় শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী গিয়ে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী শুভেন্দু দাবি করেছেন, খোদ অমিত শাহ তাঁকে নির্দেশ দেন যাতে ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে থাকেন তিনি। এদিকে ভাস্কর ঘোষ জানান, আন্দোলন শুরুর পর থেকে সরকার পক্ষের কোনও প্রতিনিধিই খোঁজ নেয়নি তাঁদের বা তাঁদের সঙ্গে কথা বলারও চেষ্টা করা হয়নি।
এর আগে নেতাজি জয়ন্তীর দিনে ডিএ আন্দোলনকারীদের ধরনা মঞ্চে এসে শুভেন্দু বলেছিলেন, 'সরকারি কর্মীরা সচেতন। সংবেদনশীল। কিন্তু ২০১৬ সালের পর তাঁরা এই সরকারের স্বরূপ বুঝেছেন। বুঝেছেন যে তাঁদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। কর্মীরা দেখেছেন আবাস যোজনা থেকে শৌচালয়। কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্পের টাকা লুঠ হয়েছে। এই সরকারি কর্মচারীরা দেখেছেন স্থায়ী ৬ লক্ষ পোস্ট অবলুপ্ত করছে সরকার। অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করছেন চার হাজার থেকে বারো হাজার। পিএসসি-র কর্মচারীরা আমায় তথ্য দেন। এমনকী বামপন্থী কর্মচারীরা আমায় জানিয়েছেন... পিএসসি অফিসকেও বাদ দেওয়া হয়নি। মিড ডে মিলের টাকায় কম্বল বিতরণ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আতঙ্কিত। এই সকল সরকারি কর্মচারীদের তিনি তাঁর পক্ষে পাবেন না আগেই বুঝে গিয়েছেন। তাই এদের ডিএ আটকে আছে। এদের তিনি পোস্টাল ব্যালটে পাবেন না। তাই এদের ওপর দমন পীড়ন নীতি নেওয়া হয়েছে। এই অনশনকারীদের কিছু হলে বাংলায় আগুন জ্বলবে। ভাস্করবাবুকে বলব, নবান্ন অভিযান করুন। আমরা পাশে আছি। এরা প্রাণ আত্মাহুতি দিতে চায়। চাকরি যাওয়ার ভয় এরা করে না।'
এদিকে মার্চ মাসে যে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে, ততদিনে যদি লোকসভা ভোটের দামামা বেজে যায়, তাহলে? এই বিষয়ে নিয়ে ভাস্কর ঘোষ দাবি করেন, মার্চে যখন ধর্মঘট শুরু করা হবে, তখন খুব সম্ভবত ভোট শুরু হবে না। আর ভোটের সময় ধর্মঘটের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানানো হবে। এদিকে অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই বিগড়েছে বলে জানান ভাস্কর ঘোষ। তিনি বলেন, 'এই ক'দিন ধরে অনশন করে প্রত্যেকের ওজন ৪ থেকে ৫ কিলো পর্যন্ত কমে গিয়েছে। চারজনের মধ্যে তিনজনের ইউরিনে কিটন বডি দেখা গিয়েছে। একজনের বিলুরুবিন অত্যন্ত বেশি। একজনের লিভারের রিপোর্ট ভালো না।'