অমানবিক বললেও কম হবে। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল যুবতীর। কিন্তু, সেই খবর শুনে শোকপ্রকাশ তো দূরের কথা উল্টে দেহের সৎকারের কোনও দায়িত্ব নিল না পরিবার। শুধু তাই নয়, বাড়ির দরজায় তালা বন্ধ করে চলে গেলেন যুবতীর দাদা-বৌদি। যার ফলে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা ধরে বাড়ির বাইরে রাস্তায় পড়ে থাকল বাড়ির মেয়ের দেহ। পারিবারিক টানাপোড়েনের জেরে শেষপর্যন্ত পুলিশের অনুমতিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন বন্ধুরা। এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল খড়দার পূর্বাচল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায় এলাকায়।
আরও পড়ুন: ছেলে মারা গিয়েছেন ক্যানসারে, বাবা ঠিক করেছেন দেশ থেকেই ক্যানসার তাড়িয়ে ছাড়বেন
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৩৪ বছরের মহিলা ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। শেষ ক’টা দিন কাটিয়েছেন নার্সিংহোমে এবং বন্ধুর বাড়িতে। খড়দার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে লাইব্রেরিয়ান পদে কাজ করতেন তিনি। তবে ক্রমেই তাঁর শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত বন্ধুরাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই বুধবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
বন্ধুদের দাবি, হাসপাতালে যখন তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন, তখন তাঁর পাশে পরিবারের কেউ ছিল না। পরে মৃত্যুর খবর পৌঁছায় সায়ন্তির দাদা ও বৌদির কাছে। কিন্তু অভিযোগ, খবর পেয়েই তাঁরা তালা লাগিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বন্ধুরাই দেহ নিয়ে পৌঁছান সায়ন্তির ‘নিজের’ বাড়ির সামনে। তখন তাঁরা দেখতে পান দরজায় তালা ঝুলছে। ফলে সেই মৃতদেহ ৬ ঘণ্টা ধরে বাইরে পড়ে থাকে।
মৃতার বন্ধু বলেন, তাঁর বাড়িতে থাকতেন। ক্যানসারের জন্য তাঁর শারীরিক অবস্থাও খারাপ ছিল। তাঁরাই তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। মৃত্যুর খবর জানিয়ে দাদা-বৌদিকে ফোন করেন। কিন্তু কেউ দেহ নিতে পৌঁছয়নি। পরে খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় পুলিশ। অবশেষে পুলিশের তরফে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়।
প্রতিবেশীদের কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছিল। সেখান থেকে সম্পর্কে ফাটল তৈরি হয়। এক সময় তাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়েও যেতে হয়। তখনই আশ্রয় নেন বন্ধুদের কাছে। এমন ঘটনার জন্য দাদা-বৌদির তীব্র নিন্দা করেছেন স্থানীয়রা।