বাঁদনা পরব উপলক্ষে গ্রামে উৎসবের আবহ। আর তার মধ্যেই দুই নাবালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনাকে ঘিরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বীরভূমের রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের অধীন আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে। কারণ, ঘটনায় অভিযুক্ত সাতজনই নাবালক। তাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ। পাড়ার একটি বাড়িতে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা সমবয়সী আর এক কিশোরীর সঙ্গে তখন গ্রামের শেষপ্রান্তে একটি দোকানে গিয়েছিল এক নাবালিকা। সেখান থেকে ফেরার পথে দুই কিশোরীকে মাঠের দিকে নিয়ে যায় পাড়ারই ৬ জন নাবালক কিশোর ও পরব উপলক্ষে গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে ঝাড়খণ্ডের দুমকা থেকে আসা আরও এক নাবালক। সেখানেই ২ নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।নির্যাতিতা এক নাবালিকার বাবা পাথর–ভাঙা এক কারখানার শ্রমিক। তাঁর কথায়, পরের দিন, রবিবার দুপুরে অসুস্থ বোধ করায় ওই কিশোরী মাকে ঘটনার কথা জানায়। তাঁরা গ্রামের মোড়ল মাঝি হারামের কাছে যান। কিন্তু তিনি বাঁদনা পরব শেষ হলে সালিশি করার কথা বলেন। এরই মধ্যে ওই দুই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে যায় তাদের পরিবার। সেখান থেকেই তাঁরা ঘটনার কথা রামপুরহাট থানায় জানান।রাতেই ৭ নাবালকের নামে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ওই গ্রামে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ৬ নাবালককে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। ঝাড়খণ্ড থেকে ওই গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আসা নাবালকের খোঁজ মেলেনি। ধৃত ৬ জনকে রামপুরহাটে চাইল্ড লাইনের হোমে রাখার ব্যবস্থা করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পকসো আইন–সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১ ধারা এবং ৩৭৬ডি (এ) ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। সোমবার তাদের জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। ধৃত ৬ নাবালককে বহরমপুরের একটি হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৭ তারিখ তাদের ফের হাজির করা হবে আদালতে।এদিকে, পুলিশের উদ্যোগে ওই দুই নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। রবিবার বিকেলে তাদের ভর্তি করা হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া দুই কিশোর রয়েছে, যাদের বয়স ১১। একজন দ্বাদশ ও একজন দশম শ্রেণির ছাত্রও রয়েছে অভিযুক্তদের মধ্যে। তাদের মধ্যে গ্রামের মোড়লের এক ভাইপোও রয়েছে। এই বয়সেই এমন অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার কথা জানাজানি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে ওই গ্রামে।