'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতি মেনে আমূল সাংগঠনিক রদবদল করল তৃণমূল কংগ্রেস। তার জেরে দলের সংগঠন থেকে বাদ পড়লেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অরূপ রায়, মহুয়া মৈত্র-সহ রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েট নেতারা। কয়েকটি জেলা সংগঠনকে ভেঙে আরও ছোটো করা হয়েছে। অর্থাৎ একাধিক সাংগঠনিক জেলা তৈরি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দলের সংগঠনে আনা হয়েছে একাধিক নয়া মুখকে।
সোমবার তৃণমূলের তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে একাধিক নয়া মুখ ঠাঁই পেয়েছে। পরিবর্তন এসেছে জেলা, ব্লক স্তরের নেতৃত্বেও। বিধানসভা ভোটের পর তৃণমূলে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল, তাতে জেলা সভাপতি পদ খুইয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জ্যোতিপ্রিয়, নদিয়ার মহুয়া মৈত্র, হাওড়ার অরূপ রায়। সবমিলিয়ে ছয় মন্ত্রী-সহ একাধিক হেভিওয়েট নেতা জেলা সংগঠন থেকে বাদ পড়েছেন। জেলা সভাপতির পদ গিয়েছে হুগলির দিলীপ যাদবেরও। সেইসঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামেরও শীর্ষস্তরে রদবদল করা হয়েছে।
একনজরে দেখে নিন জেলার সংগঠন এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের তালিকা -
নেতৃত্বের ‘মুখ’ রদবদলের পাশাপাশি জেলার সাংগঠনিক কাঠামোকে ঢেলে সাজিয়েছে তৃণমূল। একাধিক জেলাকে ছোটো সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় যেমন বিধানসভা ভোটে ফলাফলের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, তেমনই গোষ্ঠীকোন্দলেও রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে ঘাসফুল শিবির। উত্তর ২৪ পরগনাকে চারটি ছোটো সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে - দমদম-ব্যারাকপুর, বারাসত, বনগাঁও এবং বসিরহাট। যে উত্তর ২৪ পরগনায় একাংশে তৃণমূলের ফল একেবারেই আশানুরূপ হয়নি। তারইমধ্যে দুটি ভাগ হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার - ডায়মন্ড হারবার-যাদবপুর এবং সুন্দরবন। নদিয়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ জেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। হুগলির দুই সাংগঠনিক জেলার (শ্রীরামপুর এবং আরামবাগ) দায়িত্ব গিয়েছে দুই নয়া ‘মুখের’ হাতে। গোষ্ঠীকোন্দলে রাশ টানতে ভেঙে দেওয়া হয়েছে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলা। কোচবিহারেও গোষ্ঠীকোন্দল থামাতে একাধিক নেতাকে সরানো হয়েছে। কার্যত একই কারণে দার্জিলিংকেও দু'টি সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত করেছে তৃণমূল। দার্জিলিং পাহাড়ে দায়িত্ব পেয়েছেন শান্তা ছেত্রী। সমতলে পাপিয়া ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোথাও অবশ্য জায়গা পাননি প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। যিনি ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে নিজের কেন্দ্র থেকে দলকে লিড দিতে পারেননি। বিধানসভা ভোটে নিজেই হেরে গিয়েছেন।