তখন বামফ্রন্টের জমানা। পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়ির জেলা পার্টি অফিসে তখন তাবড় সিপিএমের নেতারা আসতেন। মন্ত্রীদের আনাগোনাও কম ছিল না। কারণ এখান থেকেই গোটা জেলা কন্ট্রোল করা হতো। আজ আবার এই জেলা পার্টি অফিস প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। শুধু সময় আর পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। ঝাঁ চকচকে লাল বাড়িটির রং এখন অনেকটা ফিকে হলেও একেবারে জৌলুস হারায়নি। বরং তার পাশে একটি বাড়ি আছে যার রং উঠে গিয়েছে। পলেস্তরা খসে পড়েছে। কিন্তু সেই বাড়িটিই এখন লোকসভা নির্বাচনের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। কারণ এই রংহীন বাড়িটি ভাড়া নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। আর সেখানেই হয়েছে নির্বাচনী ওয়ার রুম।
এদিকে নিমতৌড়ির লাল বাড়িটিতে এসে হাজির হলেন বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন চারিদিক ফাঁকা। দু’চারজন কর্মী–সমর্থক ছিলেন তাঁর সঙ্গে। তবে সেই গমগম পরিবেশটি হারিয়ে গিয়েছে। আসলে সিপিএমের তো একটাও বিধায়ক নেই বিধানসভায়। সাংসদ এবার কেউ হতে পারবেন কিনা জানা নেই। সংগঠন অত্যন্ত দুর্বল। তাই একদা ৩৪ বছর শাসন করা পার্টির দলীয় কার্যালয়ে শুনশান বাতাবরণ বইছে। এই পরিস্থিতিতে কতটা লড়াই দিতে পারবেন সিপিএম প্রার্থী তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। তাহলে কি ভাড়া বাড়ি থেকেই নতুন সূর্য উঠবে? উঠছে প্রশ্ন তমলুকে। এই ভাড়া বাড়ির বাড়িওয়ালার নাম শেখ হায়দার আলি। তিনিও তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক।
আরও পড়ুন: বিধায়ক–মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির বিলে সই রাজ্যপালের, এপ্রিল মাস থেকেই কার্যকর
অন্যদিকে দেবাংশু এবং তাঁর টিম এই ভাড়া বাড়ি থেকে কাজ করতে শুরু করেছেন। এখানে এসে দেবাংশু বলেছেন, ‘মাকে জানিয়ে এসেছি, এখন থেকে এটাই আমার ঘরবাড়ি।’ কথা দিয়ে সেই কথা রাখলেনও দেবাংশু। এখান থেকে নানা এলাকায় গিয়ে প্রচারের কাজ করছেন তিনি। তাছাড়া তিনি আইটি সেলের ইনচার্জ। তাই ওই ভাড়া বাড়িই এখন হয়ে উঠেছে নির্বাচনী ওয়ার রুম। এই ভাড়া বাড়িটির ভৌগোলিক অবস্থান তমলুক–শ্রীরামপুর রাজ্য সড়কের কাছে নিমতৌড়ি মহিলা কলেজ সংলগ্ন কুলবেড়িয়া এলাকায়। বাড়িটি দোতলা। ভাড়া মাসে ২০ হাজার টাকা। নিরিবিলি পরিবেশ রয়েছে এখানে। উপরে চারটি ঘর রয়েছে। আর নীচে বাথরুম এবং রান্নাঘর। এখানেই দেবাংশু উঠেছেন তরুণ তুর্কি কর্মীদের নিয়ে।