মঙ্গলবারই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের একের পর সাংসদের মুন্ডুপাত করেছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের হামলার মুখে পড়ে তিনি বিজেপির হাতের তামুক খেয়ে থাকতে পারেন বলে মন্তব্য করেছিলেন আরেক তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। আর সেই প্রলয়ের পরদিনই আপদমস্তক গেরুয়া বসনে মুড়িয়ে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিলেন কল্যাণ। তাও আবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মুসলিম অধ্যুষিত চাঁপদানিতে। এই ঘটনায় কল্যাণের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলেরই সাংসদ সৌগত রায়কে ‘নারদার চোর’ বলেন কল্যাণ। নাম না করে আরেক তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকেও বেনজির আক্রমণ করেন তিনি। জবাবে সৌগত রায় বলেন, হয়তো ও বিজেপির থেকে টাকা পেয়েছে।এই নিয়ে যখন তৃণমূলের অন্দরে তোলপাড় চলছে তখনই বুধবার সন্ধ্যায় চাঁপদানিতে রামনবমীর মিছিলে অংশগ্রহণ করেন কল্যাণবাবু। এপর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু মিছিলে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত ছিল গেরুয়ায় মোড়া। মিছিলে গেরুয়া ধ্বজ হাতে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতেও শোনা যায় তাঁকে। এর পর হনুমান মন্দিরে গিয়ে হনুমানের আরতি করেন তিনি। বলে রাখি, এই চাঁপদানি বিধানসভার বিস্তীর্ণ এলাকা মুসলিম অধ্যুষিত।গোটা কর্মসূচির একগুচ্ছ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন কল্যাণ। তার পর লিখেছেন, ‘রামনবমী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আজ অংশগ্রহণ করেছিলাম, চাঁপদানি বিধানসভায়। সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃত্ববৃন্দদের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার বুঝলাম, মানুষ সম্প্রীতির পক্ষে, শান্তির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। সকলকে জানাই অভিনন্দন।'কল্যাণের এই বেশ দেখে অনেকেই বলছেন তাঁর বিজেপিতে যোগদান সময়ের অপেক্ষা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কল্যাণের টিকিট পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, কল্যাণ তৃণমূলে কট্টর মমতাপন্থী। আর তাই অভিষেক বন্দ্যোপলাধ্যায়ের চক্ষুশূল। ফলে যে কোনও সময় তাঁর টিকিট কাটা যেতে পারে। সেকথা বুঝেই কি গেরুয়া বসনে কল্যাণ?