বীরভূমের শান্তিনিকেতনে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। মঙ্গলবার সকালে বোলপুর শিক্ষানিকেতন আশ্রম কন্যা বিদ্যালয়ের চত্বরেই একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ১২ বছরের কিশোরী অঞ্জলি বাসকির নিথর দেহ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এটি আত্মহত্যার ঘটনা নাকি খুন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: আইআইটি খড়্গপুরে ফের ছাত্রের মৃত্যু, হস্টেল থেকে মিলল চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ার দেহ
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালবেলায় স্কুলে প্রবেশের সময় এক ছাত্রীর নজরে আসে একটি ঝুলন্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানানো হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লিপিকা সেনগুপ্ত সঙ্গে সঙ্গে শান্তিনিকেতন থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে পাঠায় ময়না-তদন্তে। ঘটনাস্থল ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তবে শুধু দেহ নয়, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি হাতে আঁকা চিত্র ও লেখা-সহ একটি কাগজ। একটি গাছে ঝুলন্ত মেয়ের ছবি আঁকা রয়েছে ওই কাগজে। তার নিচে লেখা রয়েছে মৃত ছাত্রীর বাবা ও মায়ের নাম। এই ‘নোট’-টিকেই কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে রহস্য। পুলিশ এটিকে সুইসাইড নোট হিসেবেই বিবেচনা করলেও এতে এমন কিছু বার্তা রয়েছে যা তদন্তে নতুন দিক খুলে দিতে পারে বলে মনে করছে তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
জানা যাচ্ছে, অঞ্জলি বোলপুরের পারুলডাঙা এলাকার বাসিন্দা। বাড়ি থেকে হেঁটে যাতায়াত করত স্কুলে। মা মামণি বাসকি জানান, সোমবার রাতে মেয়ে বাইরে যেতে চাইছিল, কিন্তু তিনি বারণ করেন। এতে রেগে যায় অঞ্জলি। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ সে বাড়িতে ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে নিখোঁজ হয়ে যায়। তবে তার সঙ্গে যে এমন কিছু হবে তা তিনি ভাবতেই পারেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে এক ছেলের সঙ্গে অঞ্জলির ঘনিষ্ঠতা ছিল। সম্পর্কের টানাপড়েন থেকেই সে হয়তো আত্মঘাতী হয়েছে কিনা এই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে নোটে যেভাবে নিজের পরিবারের উল্লেখ করেছে এবং একটি নির্দিষ্ট চিত্র এঁকেছে, তাতে পরিস্থিতিকে একেবারে সাদামাটা আত্মহত্যা বলে মানতে নারাজ তদন্তকারী দল। এমনকি কারও প্ররোচনা বা সরাসরি অংশগ্রহণ আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা পুলিশ তদন্ত করেই স্পষ্ট করবে। ছাত্রীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।