তীর্থ কেন্দ্র হওয়ার পর এবার রথযাত্রা উপলক্ষে নতুন ইতিহাস গড়তে চলেছে দিঘা। নবতীর্থ এই সমুদ্র শহরে প্রথমবার রথ টানতে নামবেন হাজার হাজার ভক্ত। আয়োজনে প্রস্তুতি তুঙ্গে। কিন্তু, মূল চ্যালেঞ্জ একটাই সেটা হল ভিড় নিয়ন্ত্রণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে থাকবেন এই মহাযজ্ঞে। ভিড় যাতে বিপদ ডেকে না আনে, তাই নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন নিচ্ছে একাধিক কড়া ব্যবস্থা। (আরও পড়ুন: BSF-এর জালে ২ হিন্দু সহ ৫ বাংলাদেশি, অনুপ্রবেশকারীদের ফেরানো হল নিজেদের দেশে)
আরও পড়ুন: ২০ টাকা নিত, এখন হাঁকছে ১০০! দিঘায় রথ আসতেই ‘গলা কাটছে’ টোটো, পিছিয়ে নেই হোটেলও
আগামী ২৭ জুন শুক্রবার দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে এক কিলোমিটার দূরে ‘মাসির বাড়ি’র উদ্দেশে রথযাত্রা শুরু হবে। প্রভু জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার এই রথ টানতে সমবেত হবেন অন্তত দু’লক্ষ ভক্ত। এমনটাই আশা করছে জেলা প্রশাসন। ভিড়ের সেই চাপে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, সেজন্য তারকেশ্বর মন্দিরের কৌশলকেই অনুসরণ করছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। তারকেশ্বরের মতো, দিঘার মন্দির প্রাঙ্গণে ঢোকা ও বেরোনোর পথ আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে। মেন গেট দিয়ে ঢুকবেন ভক্তরা, বেরিয়ে যাবেন ৬ ও ৭ নম্বর গেট দিয়ে। তৈরি হচ্ছে বাঁশের ব্যারিকেড, যাতে রশিতে টান দেওয়ার সময় ভিড় ছড়িয়ে না পড়ে। জগন্নাথ মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত পুরো পথেই বসবে ড্রপ গেট, যার ফলে ধাপে ধাপে নিয়ন্ত্রিত হবে রথ টানা। (আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ না মিটিয়ে কি ফের আদালতে রাজ্য? মামলা নিয়ে সামনে এল বড় দাবি)
ভক্তদের রথের রশি টানার সময়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তখনই বেশি থাকে। পুরী, প্রয়াগ বা সাম্প্রতিক বেঙ্গালুরুর পদপিষ্টের ঘটনাগুলি এখন টাটকা। সেজন্য দিঘার রথযাত্রায় কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ জেলা প্রশাসন। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল ভারতীয়কে, পরে ভুল বুঝে ব্যক্তিকে দেশে ফেরাল BSF)
প্রায় ৩ হাজার পুলিশ কর্মী থাকবেন গোটা পরিসরে মোতায়েন। সঙ্গে থাকবেন সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ অফিসাররা। গোটা অভিযানে নেতৃত্ব দেবেন জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্তা জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী ও পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। হুগলির তারকেশ্বর মন্দিরে অতীতে তাঁর ভিড় সামলানোর অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগানো হচ্ছে এবার। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি বৈঠকও সারা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ডিএসডিএ ভবনে পূর্ত, বিদ্যুৎ, পরিবহন সহ একাধিক দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে হয়েছে দীর্ঘ বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য ভিআইপিরা দীঘায় পৌঁছে যাবেন ২৬ জুনেই। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে থাকবে কড়া নজর। ইসকনের বিদেশি ভক্তরাও থাকবেন এই উৎসবে।
রথ টানা হবে প্রধান রাস্তা দিয়ে, আর মাসির বাড়ি থেকে বেরনোর জন্য নির্দিষ্ট থাকবে বিকল্প পথ সি-বিচ সংলগ্ন রাস্তা। যাতে কোনও জায়গায় চাপ না বাড়ে, সেই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে আগেভাগেই।এই বিশাল কর্মযজ্ঞে নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে তাঁদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে দীঘার প্রথম রথযাত্রা হয় নিখুঁত ও নির্বিঘ্ন।