২০২২ সালের পর গত ৫ এবং ৬ মার্চ জলদাপাড়া ও গরুমারা জঙ্গলে গণ্ডার শুমারি হয়েছিল। বনকর্তারা আশা করেছিলেন, এবার জাতীয় উদ্যানগুলিতে গণ্ডারের সংখ্যা বাড়বে। সেই মতোই বাড়ল গণ্ডার। শুমারির পর দেখা গিয়েছে, জলদাপাড়া এবং গরুমারা জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা ৪৫টি বেড়েছে। যার মধ্যে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার বেড়েছে ৩৯টি। এরফলে এই জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৩১ টিতে। অন্যদিকে, গরুমারায় ৬টি বেড়ে বর্তমানে একশৃঙ্গ গণ্ডারের সংখ্যা দাঁড়াল ৬১টিতে।
আরও পড়ুন: গন্ডার বাড়ল? হাতির পিঠে চড়ে শুমারি শুরু গরুমারা, জলদাপাড়ায়, ওড়ানো হল ড্রোনও
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে ২০১৩ সালে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা ছিল ৪৩ টি। ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয় ৪৯ টি। আর ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা হয় ৫২টি। ২০২২ সালে এই জাতীয় উদ্যানের ৫৫টি গণ্ডার ছিল। বনকর্তারা জানাচ্ছেন গরুমার জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার ধীর গতিতে বাড়ছে। তবে সেই তুলনায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধির গতি বেশ ভালোই। বনদফতর সূত্রের খবর, জলপাড়ায় ২০১৩ সালে ১৮৬টি গণ্ডার ছিল। ২০১৫ সালে গণ্ডার ছিল ২০৪ টি। পরে ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছিল ২৩৭টি এবং ২০২২ সালে গণ্ডার ছিল ২৯২ টি। এবছর গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় খুশি বনদফতরের কর্তারা। জানা যাচ্ছে, গণ্ডার শুমারিতে শুধু গণ্ডারের সংখ্যা গণনা নয়, পাশাপাশি তাদের খাদ্য ও বাসস্থানের বর্তমান অবস্থা কী তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ এবং ৬ মার্চ ২ দিনের গণ্ডার শুমারিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন বন কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বন্যপ্রাণী প্রেমী সংগঠন। দুটি উদ্যানে গণ্ডার শুমারির জন্য কাজে লাগানো হয়েছে ৮৫টি কুনকি হাতি। সবমিলিয়ে ৬৩১ জন বনকর্মী ও ১৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা শুমারিতে অংশগ্রহণ করেন। এই শুমারি সফল করতে আগে দক্ষিণ ধুপঝোড়া এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে দু'দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রথমদিন বনকর্মী ও বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের এবং দ্বিতীয় দিনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতীম সেন জানিয়েছেন, গণ্ডারের সংখ্যা যে বাড়বে সকলেই সেই আশা করেছিলেন। কয়েকবছর ধরে এখানে ৩-৪টি করে সংখ্যা বাড়ছিল। এবার একলাফে ৬টি গণ্ডার বেড়েছে। অন্যদিকে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাশোয়ান জানিয়েছেন, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ৩৯টি গণ্ডার বেড়েছে। ২০২২ সালে সংখ্যাটা ছিল ২৯২টি। এবার বেড়ে হয়েছে ৩৩১ টি। এর পাশাপাশি গণ্ডার সংরক্ষণ ও জঙ্গলের সার্বিক নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।