মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুনের ঘটনায় বিহার যোগের তথ্য উঠে এসেছে। এই ঘটনায় ধৃত পাঁচজনের মধ্যে কয়েকজন বিহারের বাসিন্দা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মোটা টাকার বিনিময়ে সুপারি কিলারদের দিয়ে খুন করানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের ১০ দিন আগে থেকে তারা এলাকায় রেকি করেছিল। এদিকে, তৃণমূল নেতা খুনে সরাসরি পুলিশের গাফিলতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার নির্দেশ পেয়েই বর্ষীয়ান নেতার শেষকৃত্যে মালদায় ছুটে যান ফিরহাদ হাকিম ও সাবিনা ইয়াসমিন।
আরও পড়ুন: ‘ঘনিষ্ঠ সহযোগী’র খুনে ‘ব্যথিত ও হতবাক’ মমতা! কী লিখলেন সোশাল মিডিয়ায়?
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে খুনের পর তারা মানিকচকে পৌঁছয়। সেখান থেকে বিহারে পালানোর পরিকল্পনা ছিল। তৃণমূল নেতার খুনের ঘটনার পরেই পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছিল। এরমধ্যে একজনের বাড়ি বিহারের কাটিহারে। অপরজন ইংরেজবাজারের গাবগাছি অঞ্চলের বাসিন্দা। পরে শুক্রবার সকালে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে আরও একজন গ্রেফতার হয়েছে বিহার থেকে। ফলে ঘটনায় উঠে আসছে বিহার যোগ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত কয়েকদিন ধরে দুষ্কৃতীরা দুলালের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল। বড়দিনের উৎসবে দুলালকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল দুষ্কৃতীরা। তবে তাকে একা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দেয় তারা। পুলিশ ইংরেজবাজারের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুলদীপ মিশ্র কলোনি থেকে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা দুলালের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারফলে তিনি সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তবে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের একবার তারা এলাকায় ফিরে আসে। এরপর তারা মানিকচক হয়ে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার সব পরিকল্পনা সেরে ফেলেছিল। তবে তার আগেই তাদের গ্রেফতার করে ফেলে পুলিশ। এখন প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল নেতাকে খুন করার জন্য কে বা কারা তাদের ভাড়া করেছিল? সে বিষয়টি জানতে চাইছে পুলিশ।
এদিকে, দুলালের গাড়িচালক জানিয়েছেন, দুলালের প্লাইউড কারখানা রয়েছে। সেটি বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তিনি গাড়িতে করেই কারখানায় গিয়েছিলেন। তবে গাড়ি চালক দুলালকে সতর্ক করেছিলেন, যে কেউ তার ওপর বাইকে করে নজর রাখছে। তাই তিনি তৃণমূল নেতাকে গাড়ি থেকে নামতে নিষেধ করেছিলেন। আর তারপরেই দুলালের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে।