দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা নিকাশি নালার। ফলে বর্ষার সময় রাস্তায় জল জমে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। এছাড়া, দুর্ঘটনাও ঘটছিল বিভিন্ন জায়গায়। অবশেষে সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। শহরের বাসিন্দারা সরাসরি ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইনে ফোন করে নিকাশি সমস্যা তুলে ধরেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং দ্রুত পদক্ষেপ করে। বাঁকুড়া শহরের নিকাশি নালার জন্য পুর দফতরের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। এই অর্থেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে নিকাশি নালা নির্মাণ এবং পুরনো নালা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাতারাতি ৩৬ দিনমজুরের কর্মসংস্থান ঘটল, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইনে ফোনের জের
বাঁকুড়া পুরসভার দাবি, এই প্রকল্পে সেই সমস্যারই সমাধান হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ যাওয়ার পরই দ্রুত টাকা বরাদ্দ হয় এবং সেই অর্থ কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই নালার নির্মাণ শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের সার্কিট হাউস মোড় সংলগ্ন এলাকায় আগে কোনও নিকাশি ব্যবস্থা ছিল না। ফলে তারাগতি সামন্ত রোডের উপর দিয়ে জল বয়ে যেত। বহুদিন ধরে ওই রাস্তায় বড়সড় গর্ত তৈরি হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। রাস্তার পাশে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন জেলা আদালতের বিচারকদের বাংলো, সার্কিট হাউস এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই রাস্তার দু’পাশে ১৮০০ মিটার লম্বা ড্রেন নির্মাণের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই কাজের পাশাপাশি রেললাইনের পাশে নয়ানজুলিতে যাতে জল গিয়ে পড়তে পারে সেই উদ্দেশ্যে আরও একটি পৃথক নালার জন্য ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। লাগোয়া ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জলনিকাশির জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগ সংলগ্ন অঞ্চলে ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেও ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নালা নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
পুর প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম দফায় এই কাজগুলি শুরু হলেও এরপর আরও ১১টি ওয়ার্ডে নিকাশি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। শহরের ২, ৪ থেকে ৯, ১১, ১৩ থেকে ১৫ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ধাপে ধাপে কাজ শুরু করা হবে। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতিবছর পুজোর আগে রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হয়। সেই সময় শহরের রাস্তায় জল জমে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়। এবার পুজোর আগেই যাতে সব কাজ শেষ হয়ে যায়, সেই লক্ষ্যেই দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্প রূপায়নের কাজ চলছে। এই নিকাশি উন্নয়ন প্রকল্প সফল হলে, শহরের একাধিক ওয়ার্ডের মানুষ জলবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছে পুরসভা।