২০২৩ সালের ২ জুনের সেই বিভীষিকাময় রাত এখনও তাড়া করে বেড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের এক বৃদ্ধ দম্পতিকে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁদের একমাত্র ছেলে শিবশঙ্কর দাস। সে সময় তাঁদের চোখের জলে একটাই ভরসা ছিল পুত্রবধূ ও ছোট্ট নাতনি। সরকার দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। সেইমতো পুত্রবধূকে হোমগার্ড পদে নিয়োগে সম্মতি দিয়েছিলেন শচীন দাস ও তাঁর স্ত্রী। ভেবেছিলেন, সংসার আবার গড়ে উঠবে, নাতনি বড় হবে মা-ঠাকুরদার-ঠাকুমার ভালবাসায়।
আরও পড়ুন: নিলাম হয়ে গেল বালাশোরের অভিশপ্ত সেই তিন ট্রেন, কত দাম উঠল জানেন?
কিন্তু, বাস্তব ছবিটা অন্যরকম। চাকরি ও ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে পাওয়ার পরে পুত্রবধূ ফের বিয়ে করেছেন। নতুন সংসার পেতেছেন ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের পাঁচহরি গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে। সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন তিন বছরের নাতনিকেও। বৃদ্ধ শচীন দাস ও তাঁর স্ত্রী এখন নিঃস্ব কান্নায় ভেজা চোখে শুধু একটি প্রশ্ন করেন, ‘আমরা তো রাজি হয়েছিলাম, ওর চাকরির পেছনে আমাদের সম্মতি না থাকলে চাকরি হতো না। তাহলে এখন আমরা পর হয়ে গেলাম কেন?’
শুধু সম্পর্ক ছিন্ন করেই থেমে থাকেননি ওই পুত্রবধূ। অভিযোগ, চাকরির আয়ের একটি অংশও দেন না তাঁদের। এমনকি ওষুধ কেনার টাকাও জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। শচীনবাবু জানান, পুত্রবধূ একবার থানার মধ্যস্থতায় কিছু টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ চালানোই তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।শেষপর্যন্ত ৭২ বছর বয়সী শচীন দাস ফোন করেন ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি ন্যায্য দাবি জানান তিনি। অভিযোগ জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে। জেলা স্তরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।