বছরখানেক আগেই রাজ্য সেচ দফতর উদ্যোগী হয়ে সংস্কার করেছিল ডানকুনি খাল। বৈদ্যবাটি থেকে ডানকুনি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের স্বাভাবিক জলের গতি ফেরাতে এই সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু, কিছু মাস যেতেই আবারও বিপদের মুখে সেই খাল। কারণ, খালের ধার ঘেঁষে গজিয়ে ওঠা একের পর এক বেআইনি খাটাল। সেই বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসে জাতীয় পরিবেশ আদালত। (আরও পড়ুন: IIM কলকাতায় হস্টেলে ধর্ষণ তরুণীকে, গ্রেফতার অভিযুক্ত ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া)
আরও পড়ুন: খাটাল নিয়ে টক টু মেয়রে হুমকির নালিশ ব্যক্তির, কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন মেয়র ফিরহাদ
অভিযোগ উঠেছে, খাটাল থেকে প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে আবর্জনা, গবাদি পশুর মলমূত্র, চর্বি, পচা চামড়া ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ। তার জেরেই ধীরে ধীরে খাল ভরাট হয়ে জলের গতি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সরব হন পরিবেশকর্মীরা। বিষয়টি উঠে আসে সংবাদমাধ্যমেও। পরিবেশ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ডানকুনি খালের ধার থেকে সমস্ত বেআইনি খাটাল সরাতে হবে। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরই তৎপর হয়েছে ডানকুনি পুরসভা ও হুগলি জেলা প্রশাসন। পুরসভা ও পুলিশ যৌথভাবে এলাকাবাসী এবং খাটাল মালিকদের সতর্ক করেছে। মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে খাটাল না সরালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে এবং উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। (আরও পড়ুন: সীমান্তে বাংলাদেশি অপরাধীদের হামলায় জখম বিএসএফ জওয়ান, আটক ২)
আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে আটক ৭৫০ পরিযায়ীর ভেরিফিকেশন করেছে রাজ্য, বিতর্কের মাঝে জানাল পুলিশ
আরও পড়ুন: কসবার কলেজের দেওয়ালে এখনও মোছা হয়নি 'মনোজিত দাদা আমাদের হৃদয়ে' গ্রাফিটি!
উল্লেখ্য, ডানকুনি পুরসভার মোট ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ৬টি ওয়ার্ডে গড়ে উঠেছে এই বেআইনি খাটালগুলো।আখডাঙা, পাটশাহিআট, মল্লিকপাড়া, লস্করপাড়া, নিউ রামকৃষ্ণপল্লি ও উত্তর সুভাষপল্লি এই এলাকাগুলিতে রয়েছে প্রায় ৩০০টিরও বেশি খাটাল। যদিও পুরসভার নথি বলছে, মাত্র ১৮০টি খাটাল নথিভুক্ত। অনুমান, এসব খাটালে প্রায় ১,০০০টিরও বেশি গবাদি পশু রয়েছে, যেখান থেকে কলকাতা-সহ আশপাশের এলাকায় দুধ সরবরাহ হয়। খাটাল মালিকরা সংবাদমাধ্যমে মুখ না খুললেও প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন, বিকল্প জায়গা দেওয়া হোক খাটাল চালানোর জন্য। তাঁদের দাবি, বছরের পর বছর ধরে এটাই তাঁদের জীবিকা। হঠাৎ করে উচ্ছেদ করলে বিপদে পড়বেন তাঁরা। পুরসভার চেয়ারপার্সন হাসিনা শবনম ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রকাশ রাহা জানান, খাল বাঁচাতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার কোনও প্রশ্নই নেই। খাটাল মালিকদের এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে পশুগুলো অন্যত্র সরানোর জন্য।এক পরিবেশকর্মী জানান, খাটালের বর্জ্যে শুধু খাল নয়, গোটা এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। খাল প্রায় পুরোপুরি বুজে গিয়েছে। এগুলো সরানো ছাড়া কোনও রাস্তা নেই।