বর্ষা প্রবেশ করেছে রাজ্যে। তার ফলে গত কয়েকদিন ধরেই লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়-জেলায়। এর ফলে নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। বাঁকুড়া জেলায় তার ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে মাত্র দু’দিনেই। টানা ভারী বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে শিলাবতী ও গন্ধেশ্বরী নদী। এই দুই নদীর জলে ডুবে গিয়েছে জেলার একাধিক সেতু। ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে।
আরও পড়ুন: বর্ষা ঢুকল পুরো বাংলায়! ৬ জেলায় লাল সতর্কতা জারি আজ, প্রবল বৃষ্টি চলবে কতদিন?
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়ায় গত একদিনে বৃষ্টি হয়েছে ১৪২ মিলিমিটার। দু’দিন মিলিয়ে বৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১০ মিলিমিটারে। প্রবল বর্ষণের জেরে রাতভর নদীতে জল এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে বৃহস্পতিবার ভোরে সিমলাপাল সেতুর উপর দিয়ে বইতে শুরু করে স্রোত। ফলে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এই অবস্থায় সেতু পার হতে গিয়ে আটকে পড়ে তিনটি ট্রাক। স্থানীয় বাসিন্দারাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখান থেকে চালক ও সহযাত্রীদের উদ্ধার করেন।
শুধু সিমলাপাল নয়, জলমগ্ন হয়েছে শিলাবতী নদীর উপর থাকা ভেলাইডিহা সেতুও। একইসঙ্গে ডুবে গিয়েছে গন্ধেশ্বরী নদীর উপরে থাকা মানকানালি সেতু। গতকাল সন্ধ্যা থেকে এই সেতুর উপর দিয়ে প্রায় তিন থেকে চার ফুট উচ্চতায় জল বইছে। ওই এলাকায় প্রবল স্রোতে যাতায়াত একপ্রকার বন্ধ। ফলে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ অংশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিকল্প রাস্তা থাকলেও বাঁকুড়া শহরে পৌঁছাতে ঘুরপথে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। অনেকেই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও জলের নিচে থাকা সেতু দিয়েই যাতায়াত করছেন। ফলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গে মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় হওয়ায় এবং বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপ তৈরির কারণে আগামী কয়েকদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বাঁকুড়ার স্থানীয় প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিপজ্জনক সেতু এবং জলমগ্ন এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে গ্রামীণ অঞ্চলে বিকল্প রাস্তার অভাবে বাসিন্দারা এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।