মেয়েকে তো মেরেই ফেলা হয়েছে। খুব নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে। এবার নিহত নির্যাতিতার ভাইকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনই অভিযোগ তুলেছেন কামদুনির নির্যাতিতার ছোট ভাই। এই অভিযোগ তুলছেন নির্যাতিতার পরিবারেরও সদস্যরা। কামদুনির নির্যাতিতার ছোট ভাই যখন অফিস যান তখন তাঁকে অনুসরণ করা হয়। তাঁর উপরে নজরদারি পর্যন্ত চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ ওই যুবকের। এই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের। এভাবেই কি ওরা গোটা পরিবারকে শেষ করতে চায়? প্রশ্ন তুলছেন পরিবারের সদস্যরা।
কামদুনি গণধর্ষণ ও হত্যা কাণ্ডে চারজনকে ফাঁসি এবং যাবজ্জীবনের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায় নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল রাজ্য–রাজনীতিতে। এমনকী এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার এবং কামদুনির প্রতিবাদীরা। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সুপ্রিম কোর্ট ওই রায়ের নির্দেশে কিছু শর্ত চাপিয়ে দেয়। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, নিজেদের গতিবিধি সম্পর্কে রাজারহাট থানাকে বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে অভিযুক্তদের। আর তারা কোনওভাবেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবে না। এমনকী কোনওরকম বিরক্ত করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ‘আমি জানতে পারি ওর তিনটে বিয়ে’, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ যুবতীর
সেখানে এমন ঘটনা ঘটার অভিযোগ ওঠায় এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নির্যাতিতার ছোট ভাইয়ের অভিযোগ, তাঁকে খুনের ছক কষছে ওই অভিযুক্তরা। নির্যাতিতার ভাইয়ের কথায়, ‘২০২৪ সালের শুরুতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎই পিছন থেকে কেউ কাউকে বলছেন যে, আমি তো সামনে আছি। লাঙলপোঁতা মোড়ে সাঙ্গপাঙ্গ জড়ো করে ওই দিনই আমাকে খুনের ছক করা হচ্ছিল। তাই তখন দু’তিনজন আমার কাছে এসে দাঁড়ায়। তখন আত্মীয়দের ডেকে তাঁদের সাহায্যে বাড়ি ফিরি। আর বিষয়টি জানিয়ে রাজারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ করি।’ বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে নিউটাউনের উপ–নগরপাল মানব সিংলা বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। আমরা রাজারহাট থানার সঙ্গে কথা বলব।’
এই ঘটনা এখন গোটা কামদুনি জেনে গিয়েছে। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। নিহত নির্যাতিতার ভাইয়ের বক্তব্য, তাঁর কর্মস্থল ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের সামনে কয়েকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। তাঁর কথায়, ‘আমি আড়ালে থেকে মোবাইলে ওদের গতিবিধির ভিডিয়ো করেছি। সেটা হেয়ার স্ট্রিট থানায় গিয়ে পুলিশকে সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে নতুন করে অভিযোগ জানাই। এবার লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে কামদুনিতে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।’ এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শনিবার বিকেলে তিনি আকন্দকেশরী সেতু থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত পদযাত্রায় যোগ দেবেন।