রাজ্যে ফের হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে সরব হল বিজেপি। ফের মালদায় হিন্দুরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার রাতে মালদার রতুয়া বিধানসভার অন্তর্গত দুর্গাপুরের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্মিয়মান মন্দিরে ইটবৃষ্টি করা হয়েছে অভিযোগ। বিজেপির দাবি, একই সঙ্গে ইটবৃষ্টি হয়েছে হিন্দুদের বাড়ি ও দোকানেও ইট ছোড়া হয়েছে। গোয়াল থেকে লুঠ করা হয়েছে গরু।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘আবারও রাতের অন্ধকারে মালদা জেলার রতুয়ায় জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হলেন সনাতনীরা। মন্দির বানানোর 'অপরাধে' চলল ইটবৃষ্টি। নির্বিচারে মুড়ি-মুড়কির মতো পড়ল ইট। যথারীতি আক্রমণ চলাকালীন পুলিশের দেখা মেলেনি, মিলবেই বা কী করে? তখন এসে পড়লে যাদের ধরতে হতো তারা তো আবার মাননীয়ার স্নেহধন্য।’
এর পর শুভেন্দুবাবু লিখেছেন, ‘আমি এই জেহাদিদের ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মনে করিয়ে দিতে চাই, মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধু মাত্র মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বা সামসেরগঞ্জে মোতায়েন করার নির্দেশ দেননি, পশ্চিমবঙ্গের যেখানে প্রয়োজন সেখানে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, আপাততঃ এই নির্দেশ ৩১ শে জুলাই অবধি লাগু হলেও, মেয়াদ বৃদ্ধির সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে, এবং প্রয়োজন পড়লে তা বাড়ানো যেতে পারে ও ভবিষ্যতে উত্তপ্ত এলাকায় স্থায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প রেখে দেওয়া নিয়েও আলোচনা চলছে। তাই পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে এই ঘৃণ্য ঘটনা গুলো আটকান ও দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করুন। নইলে আপনাদের এই সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করার অধিকার না চলে যায় কোনো দিন।’
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, ‘ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ তোষণের রাজত্বে জেহাদি তাণ্ডবের কোনও লাগাম নেই! মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান, সামশেরগঞ্জের পর এবার মালদার রতুয়া বিধানসভার অন্তর্গত দুর্গাপুরে দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাতের অন্ধকারে আবার হিন্দুদের বাড়িঘর, দোকান লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোঁড়া হল, নিরীহ হিন্দুদের হুমকি দেওয়া হল। এলাকায় একটি মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি একাধিক সময় হুমকির অভিযোগ আসছিল। গতকাল রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বিশেষ স্নেহধন্য' মৌলবাদী জেহাদিদের আক্রমনে ওই এলাকায় প্রচুর বাড়ি, দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুর্শিদাবাদের কায়দায় হিন্দুদের বাড়ির গোশালা থেকে গরু, বাছুর উধাও করে দেওয়ার অভিযোগও এসেছে। আর নির্লজ্জতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করা প্রশাসনের ভূমিকা?'
পুলিশের ভূমিকায় নিন্দা জানিয়ে সুকান্তবাবু লিখেছেন, ‘মমতাময়ীর কৃপার পাত্র অপদার্থ মেরুদণ্ডহীন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর অস্ত, এত বড় জেহাদি তাণ্ডব চলছে দেখেও অন্ধের ভূমিকা পালন করেছে! সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ঘটনায় আদালতের একের পর এক থাপ্পড় খেয়েও কোনও বদল নেই রাজ্য প্রশাসনের! যদি এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত প্রতিটি মৌলবাদী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বাকিটা বৃহত্তর আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বিজেপি বুঝে নেবে। নিরীহ হিন্দু ভাই-বোনেদের উপর নির্বিচারে আক্রমণ আমরা কোনওভাবেই মুখ বুজে সহ্য করব না।’