সামান্য কথা কাটাকাটির জেরে শ্বশুর ও শ্যালিকাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল জামাইয়ের বিরুদ্ধে। মারমুখী জামাইয়ের হাত থেকে তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হলেন প্রতিবেশীও। শ্বশুর ও শ্যালিকাকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত জামাইকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, বাবা ও মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি মহকুমা খড়িবাড়ি শচীন্দ্রচন্দ্র চা বাগান এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই অভিযুক্তের নাম মারিয়ানুস ওরাওঁ। অন্যদিকে, মৃত শ্বশুরের নাম মাহারু ওরাওঁ (৭৭) ও তাঁর মেয়ে পেনোর ওরাওঁ। এছাড়াও আহত ব্যক্তির নাম অ্যালবার্ট মিনজ। মঙ্গলবার ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় মাহারু ওরাওঁ ও তাঁর মেয়ে পানোর সঙ্গে পারিবারিক বিবাদের জেরে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল জামাই মারিয়ানুসের। কিন্তু এই সামান্য কথা-কাটাকাটির প্রতিশোধ নিতে যে এমন ভয়াবহ কাণ্ড ঘটাবে জামাই, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি কেউ। মারিয়ানুসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, বাকবিতণ্ডা চলাকালীন আচমকাই শ্যালিকা পেনোর উপর ধারাল ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। তারপর এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে ওই তরুণীকে। ঘটনার জেরে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ওই তরুণী। মেয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন মাহারু। এসে দেখেন, তাঁর মেয়েকে ছুরি দিয়ে কোপাচ্ছে জামাই। তখনই তিনি বাধা দিতে গেলে তাঁকেও এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে মারিয়ানুস। ঘটনার সময় বাবা মেয়ের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন প্রতিবেশী অ্যালবার্ট মিনজ। তিনি মারিয়ানুসকে বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কুপিয়ে দেয় অভিযুক্ত। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনেই ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এর পরেই গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে বাবা ও মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রতিবেশীও গুরুতর জখম অবস্থায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।খড়িবাড়ি বাগানের ম্যানেজার ভিপি সিং জানিয়েছেন, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। মাহারু ওরাওঁ চা বাগানের স্থায়ী কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনায় খড়িবাড়ি থানা পুলিশ অভিযুক্ত জামাই মারিয়ানুস ওরাওঁকে গ্রেফতার করে।