আবার সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সুড়সুড়ি। আর তার জেরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীরভূমের পীঠস্থান। আর ওই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেয় বিজেপি বলে অভিযোগ। কদিন ধরেই তা করছিল। এবার তা চরম আকার নিল। আর তার জেরে মিছিল থেকেই জেলা বিজেপির সভাপতি–সহ ১৫ জন কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে এখন জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নদীকে দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে পূর্ত দফতর। আর সেই কাজই তারা করছিল। কিন্তু বিজেপি এলাকায় খবর ছড়িয়ে দেয় দূষণমুক্ত করার নামে হিন্দু বৈষ্ণবদের সমাধিস্থল ভেঙে সেখানে আবর্জনাস্তূপ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাতেই তেতে ওঠে তারাপীঠ এলাকা।
এদিকে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপি সরকারি কাজে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তারাপীঠ মহাশ্মশানের কাছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু বৈষ্ণবদের সমাধিস্থল ভেঙে দেওয়া হবে বলে অভিযোগ তুলে কদিন ধরেই বিক্ষোভ, প্রতিবাদ দেখাচ্ছিল জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার এই ইস্যুকে সামনে রেখে মিছিল করেন জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা। তখন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এলাকায় কাজ করতে গিয়েছিল একটি দল। তাদের কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরেই ধ্রুব সাহা এবং জেলা বিজেপির বেশ কয়েকজনকে কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের লোকেরাও উগ্র হতে পারে, ২মিনিট সময় লাগবে’, যাদবপুর নিয়ে হুঁশিয়ারি রাজের
তারাপীঠে রয়েছে দ্বারকা নদী। আর তাতে দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর। আর সেটা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা পর্যন্ত করা হয়। এই বিষয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দেয়, দ্বারকা নদীকে দূষণমুক্ত করতেই হবে। সেই কাজের দায়িত্ব বর্তায় পূর্ত দফতরের উপর। তারাপীঠ–রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের পরামর্শে পূর্ত দফতর নদীর ঘাটে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্র বসায়। এই যন্ত্রের সাহায্যে জল পরিশোধনের কাজ হবে। তাই পাইপও বসানো হয়েছে। পূর্ত দফতরের জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়র দেশবন্ধু হাজরা বলেন, ‘বামদেবঘাটে জলাধার বানিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্র বসিয়েছি আমরা। ওই কাজে সফলও হয়েছি। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই এই জল পরিশোধনের কাজ চলবে।’
এই কাজের বিরোধিতা করে আপত্তি তোলে জেলা বিজেপি। বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহার অভিযোগ, ‘অতীতে শ্মশান সংস্কার করার নামে গাছ কাটা হয় এবং সেখানে অতিথিশালা গড়ে ওঠে। এবার নদীতে দূষণ মুক্ত করার নামে মহাশ্মশানে জোর করে হিন্দু বৈষ্ণবদের সমাধিস্থল ভেঙে ফেলা হবে। তাই বিজেপির জেলা নেতৃত্ব সেখানে প্রতিবাদ মিছিল করেছে।’ আজ, বৃহস্পতিবার সেখানে সরকারি কাজ চলাকালীন ধ্রুব সাহার নেতৃত্বে মিছিল হয়। আর সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হয়। তাই মিছিল চলার সময় পুলিশ গ্রেফতার করে জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং কয়েকজন নেতা–কর্মীকে।