বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল ১৭ বছর বয়সি যুবকটি। সেই সময়ই বিএসএফ তাকে ধরে ফেলে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে। জানা গিয়েছে, ওই কিশোরের নাম অপন চন্দ্র সিংহ। সে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার থুমনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। হিলি থানার অন্তর্গত বালুপাড়া বিওপির সীমান্ত এলাকায় ধরা পড়ে অপন। পরে পুলিশের হাতে অপনকে তুলে দেয় বিএসএফ। বুধবার ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করেছে পুলিশ। আপাতত ওই কিশোরকে শুভায়ন হোমে পাঠানো হয়েছে। (আরও পড়ুন: মণিপুরে কি সত্যিই স্টারলিঙ্কের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল? তদন্ত শুরু কেন্দ্রের)
আরও পড়ুন: চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৭-১০ টাকা, খিদে মেটাতে ভারতের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সীমান্তে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করেন কর্তব্যরত এক বিএসএফ জওয়ান। সেই সময়ই অপনকে ধরে ফেলেন সেই জওয়ান। এরপর তাকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর রাতেই আইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হিলি থানার পুলিশ হাতে হস্তান্তর করে ১৫১ নম্বর ব্যাটেলিয়ন বিএসএফ। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা রুজু করে পুলিশ। (আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে নয়া তথ্য সামনে, আছে সুখবর নাকি দুঃসংবাদ?)
আরও পড়ুন: আগে স্থানীয় নির্বাচন করাতে চান ইউনুস, BNP বলল - 'মানবা না... ষড়যন্ত্র হচ্ছে'
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ধরা পড়েছিলেন বেশ কয়েকজন হিন্দু। সেই ঘটনায় মোট ৮ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ধরে এই ৮ জনকে। তাদের মধ্যে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন ৬ জন। আর বাকি ২ জন অনুপ্রবেশকারীদের সাহায্য করতে গিয়ে ধরা পড়েন। জানা গিয়েছে, ধৃতরা হলেন - চন্দ্র দেবনাথ (বয়স ৫২ বছর), গণেশ চন্দ্র দেবনাথ (বয়স ৪০ বছর), বুদা চন্দ্র দেবনাথ (বয়স ৩৫ বছর), সোহাগ চন্দ্র (বয়স ৩১ বছর), কামরুজ্জামান হিটলার (বয়স ৩৫ বছর), মমিনুর রহমান (বয়স ৩৫ বছর), ছইবুর রহমান (বয়স ৩২ বছর) এবং এক ১৬ বছর বয়সি কিশোর। ধৃতদের মধ্যে মমিনুর এবং ছইবুর অনুপ্রবেশকারীদের সাহায্য করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন। (আরও পড়ুন: তিরুপতিতে কেন পদপিষ্ট হয়ে মৃত ৬? সামনে এল কারণ, 'ফাঁক ছিল', মানল TTD)
আরও পড়ুন: পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় এবার US সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প, স্বস্তি কি পাবেন?
৬ জানুয়ারি দুপুরে অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতার করা হয় চাপড়া গ্রাম থেকে। ধৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিরামপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আপাতত তারা সেই থানাতেই আটক আছেন। এদিকে ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন সাহায্যকারী চোরাচালানকারী পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। ধৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল, ভারতীয় সিমকার্ড, একটি ভারতীয় আধার কার্ড ও একটি ভারতীয় প্যান কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়। (আরও পড়ুন: গ্রিনল্যান্ড 'কিনতে চান' ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন বিদেশ সচিব বলে দিলেন...)
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। এই আবহে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ধরা পড়েছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। এরই মাঝে আবার গত কয়েকদিনে শীত বেড়েছে। তারই সঙ্গে ভোরে কুয়াশাও বেড়েছে। যার ফলে অনুপ্রবেশকারীদের সুবিধা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সবের মাঝেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, বেআইনি ভাবে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারেন ভারতে।
এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় চার হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়েছিলেন। প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, দেবনগড় ইউনিয়নের সুকানী সীমান্তের ৭৪০ নম্বর মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব–পিলার এলাকা থেকে একই পরিবারের ৩ সদস্য সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতরা সকলেই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের নাম - মণিরাম বর্মণ (৫২), তাঁর স্ত্রী হীরা রানি বর্মণ (৩৫), মণিরামে প্রথম স্ত্রীর ছেলে (প্রথম স্ত্রীর) রিপন বর্মণ (২১) এবং প্রতিবেশী নিমাই চন্দ্র বর্মণ। ধৃতরা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধোন্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ঠাকুরগাওঁয়ের এক দালালচক্রের সাহায্যে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন এই চার বাংলাদেশি। সেই সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের দেখে ফেলে এবং বিজিবিকে অবগত করে। তখন বিজিবি তাঁদের গ্রেফতার করে।
অপর এক ঘটনায় বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের এক নাবালিকা এপারে চলে এসেছিলেন এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, আতঙ্কে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন ১৭ বছর বয়সি এক নাবালিকা। তবে এপারে এসে বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছেন সেই তরুণী। পরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে সেই তরুণীকে তুলে দেয় বিএসএফ। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর দিনাজপুরে। ধরা পড়ার পরে সেই তরুণী দাবি করেছেন, তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই মৌলবাদীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। তবে সম্প্রতি তাঁকে অপহরণ করার হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার পরিকল্পনা করে সেই নাবালিকা। তবে আইনি পথে ভিসা নিয়ে ভারতে আসতে কতদিন লাগতে পারে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাই পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করেন তিনি। আর তখনই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন সেই তরুণী। এছাড়া সম্প্রতি দুই বৃদ্ধাও বাংলাদেশ থেকে এপারে এসে পুলিশের জালে ধরা পড়েছিলেন।