শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে ভরসা আসানসোল ইএসআই হাসপাতাল। তাই এখানে চাপ বাড়ছে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানায় এখনও বাড়ল না হাসপাতালের বেডের সংখ্যা। এমনকী পাঁচ বছর পরেও হস্তান্তর করা হল না নতুন বিল্ডিং। এমন আবহে ইএসআই হাসপাতালে মোদী সরকারের ৯ বছরের সাফল্য প্রচার করতে এসে পিঠটান দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল মরেশ্বর পাটিল। কারণ ২০২০ সালের নতুন হাসপাতাল বিল্ডিং চালু হওয়ার কথা ছিল। সেখানে ২০২৩ সালেও কাজ শেষ করতে পারেনি। সুতরাং মোদীর সাফল্য প্রচার করতে এসে অসম্পূর্ণ হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের দিকে পা বাড়িয়েও ফিরে এলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, কুলটি, সালানপুর এলাকার শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের ভরসা আসানসোল ইএসআই হাসপাতাল। এখানে প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার কথা। রোজই গড়ে ৪০ থেকে ৫০টি করে নতুন শ্রমিকের কার্ড তৈরি হচ্ছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর আসানসোল লোকসভা আসনের সাংসদকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়। ২০১৮ সালে আরও ৫০ বেডের একটি পৃথক হাসপাতাল বিল্ডিং গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে মডিউলার ওটি থেকে তিনটি লিফট, ডায়ালিসিস থেকে আইসিই–সহ সব সুবিধা থাকার কথা ছিল। ২০২০ সালেই ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা হাসপাতাল হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালেও নতুন হাসপাতাল বিল্ডিং বিশবাঁও জলে।
তারপর ঠিক কী হল? এখনও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। উলটে প্রকল্পের মূল্য বেড়ে ৩১ কোটি থেকে ৩৭ কোটি হয়েছে। কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত দিয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে নতুন বিল্ডিং। তবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই ইএসআই হাসপাতালেই গড়ে উঠেছে নার্সিং কলেজ, পুরনো বিল্ডিংয়ে চালু করা হয়েছে ডায়ালিসিসি ইউনিট, মডিউলার ওটি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে পড়েন বিজেপি নেতা–নেত্রীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মন্ত্রী পুরো বিষয়টি জানতে চান। তারপর সেই বিল্ডিংয়ের দিকে পা না বাড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফিরে যান মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমি কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জট কাটাতে উদ্যোগী হবো।’