পুরুলিয়ায় মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে এক যুবককে বাড়ি থেকে টেনে বার করে বেধড়ক মারধর করা হল। তারফলে মৃত্যু হল ওই যুবকের। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার-সহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মৃত যুবকের পরিবার অভিযোগ করেছে, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে মারধর করে খুন করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে টামনা থানার অধীনে থাকা চাকলতোড় গ্রামে। মৃত যুবকের নাম তাপস মহাপাত্র। বয়স ২০ বছর। (আরও পড়ুন: দিল্লি গিয়েও মমতা বন্দনায় দিলীপ, 'দলত্যাগ' নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি)
আরও পড়ুন: লিভ–ইন পার্টনারের সম্মান বাঁচাতে গিয়ে খুন যুবক, বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা নিউটাউনে
অভিযোগ, সোমবার বিকেলে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে টেনে বের করে মারধর শুরু করে। পরে মোটরবাইকে করে তাঁকে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা বলেছিল থানায় নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরে জানানো হয় তাপস বিষ খেয়েছে এবং এখন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর মা ভাদু মহাপাত্র জানান, বিকেল ৫টা নাগাদ তাঁর ছেলেকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে মারধর করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন জানতে পারেন, ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তাঁর ছেলে আর বেঁচে নেই। তাপসের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁর এক আত্মীয় জানান, যুবকের শরীর জুড়ে কালশিটে দাগ ছিল। থানা বলেছিল বিষ খেয়েছে, কিন্তু সেই দাগগুলো স্পষ্ট বলছে তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে টামনা থানার পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার মলয় পুইতন্ডি, যিনি টামনা থানাতেই কর্মরত। তিনি ও তাপস একই গ্রামের বাসিন্দা। (আরও পড়ুন: কসবা ধর্ষণে অভিযুক্ত মনোজিতের 'অনুপ্রেরণা' গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই!)
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার সত্যতা জানতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে এবং সেটির ভিডিয়োগ্রাফিও করানো হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের জেরা চলছে। যেই দোষী প্রমাণিত হবে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাপসের পরিবারের দাবি, তাঁকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর মা বলেন, ছেলেকে মোবাইল চোর বলে মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর পর অভিযুক্তরা বিষয়টি চেপে যেতে তাঁদের টাকা দিয়ে মিটমাট করতে চেয়েছিল। এটা নিছক মারধর নয়, পরিকল্পিত খুন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে জেলা পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের ধারায় কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে পুলিশের তরফে ইঙ্গিত মিলেছে।