সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে তার উপর গড়ে তোলা হয়েছে গ্যারাজ। এমনই অভিযোগ উঠল এক প্রভাবশালী সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জমি দখলের জেরে থমকে গিয়েছে স্কুল সংস্কারের কাজ। পড়াশোনার পরিবেশও ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের।
আরও পড়ুন: স্কুলে ঢুকে ছাত্রীকে চকোলেটের লোভ, অপহরণের চেষ্টা, বাঁচালেন প্রধান শিক্ষিকা
জানা যাচ্ছে, রবীন্দ্রপল্লির কবিগুরু শিক্ষা নিকেতন নামের ওই স্কুলে এখন প্রায় ১১০ জন পড়ুয়া রয়েছে। অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ঠিক পাশের ফাঁকা জায়গায় বাইক ও সাইকেলের গ্যারাজ গড়ে তুলেছেন এলাকার সিপিএম নেতা অরূপ বসু ওরফে কুরু। যদিও ওই জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাধুরী মণ্ডলের অভিযোগ, স্কুলের জমি আটকে গ্যারাজ বানানো হয়েছে। পাইপ বন্ধ করে দেওয়ায় ছাদে জল জমছে। ফাটল ধরছে। জানালা খোলা যায় না, ক্লাসঘর গুমোট হয়ে থাকে। বারবার অনুরোধ করেও কোনও কাজ হয়নি। স্কুলটি ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে সংস্কারের জন্য। কিন্তু জমি দখলের জন্য কোনও কাজ শুরু করতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, জমির দলিল ঠিক নেই, সরকারি জমিতেই গ্যারাজ গড়ে তোলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জমা পড়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এবং পুরসভায়। যদিও অভিযুক্ত সিপিএম নেতা অরূপ বসু দাবি করেছেন, এটা তাঁর আত্মীয়র জমি। স্কুলের জমি হলে তাঁরা প্রমাণ দিলে এই জায়গা তিনি ছেড়ে দেবেন। এদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে প্রশাসন।
খাদ্যমন্ত্রী তথা মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ জানান, তিনি চান শিক্ষা সংসদ তদন্ত করে দেখে স্কুলের জমির সীমানা চিহ্নিত করুক এবং প্রয়োজনে দেওয়াল তোলা হোক। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার জানিয়েছেন, সরকারি জমি দখলের কোনও ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে তিনি নিজে গিয়ে দেখে আসবেন বলেও জানান। স্কুলের জমি নিয়ে এমন টানাপোড়েনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের প্রশ্ন, সরকারি জমি ঘিরে এভাবে যদি রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করে, তাহলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী হবে।