সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার পর ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ওড়িশা এবং গুজরাটে বহু পরিযায়ী শ্রমিক হামলার শিকার হচ্ছেন। ঘটনায় আতঙ্কে তাঁরা বাড়ি ফিরছেন। যার মধ্যে রয়েছেন বেলডাঙার কয়েক হাজার শ্রমিক। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন মুর্শিদাবাদে ফিরে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের চোখে মুখে এখনও রয়েছে আতঙ্কের ছাপ। এবার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে ওড়িশা এবং গুজরাট এই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ওড়িশায় আক্রান্ত বাংলার শ্রমিকরা, ফিরে থানায় অভিযোগ, মমতার দ্বারস্থ হবেন MLA
সোমবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী উপেন্দ্র প্যাটেলকে চিঠি লিখেছেন অধীর। বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদের অভিযোগ, বাংলার দরিদ্র, নিরীহ শ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় এবং গুজরাটের সুরাট সংলগ্ন এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। এমনকী তাঁদের দেশছাড়া করারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তাঁর দাবি, ভারতের নাগরিক হিসেবে শ্রমিকদের জীবন, জীবিকার অধিকার রয়েছে। তা রক্ষার জন্য দুই রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে যথাযথ পদক্ষেপের জন্য অনুরোধ করেছেন অধীর চৌধুরী।
এর পাশাপাশি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। সিটু অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নও পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সরব হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, গুজরাটে কমপক্ষে ২০০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি তাঁদের ওপর হামলা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। সংগঠনটি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
বাংলার সরকারের কাছে এবিষয়ে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের শ্রমিক সংগঠন এআইসিসিটিইউ-র অভিযোগ, শুধু ওড়িশা, গুজরাটেই নয়, অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্য যেমন ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, অসমেও বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের বিনা কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই শ্রমিক সংগঠনের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি হেল্পডেস্ক খোলা হয়েছে।
পাল্টা এনিয়ে অধীরকে আক্রমণ করেছে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কটাক্ষ, তামিলনাড়ুতে বিজেপি সরকার নেই। সেখানে বাংলার প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিন সেখানে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। তাই অধীরের উচিত তামিলনাড়ু সরকারকেও চিঠি লেখা।