নকল আধার কার্ড তৈরির সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের হদিস পেয়ে বীরভূম থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি তথ্য সংগ্রহ ও বিদেশে তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছে। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ধৃতদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য যোগাযোগের ইঙ্গিত।
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার নৌসেনা কর্মী
জানা গিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির নাম শেখ মীরাজ ও আবদুল কুদ্দুস ওরফে শেখ মুন্না। দু’জনেই বীরভূমের পাঁড়ুই থানার অন্তর্গত এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে একাধিক ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। জানা গিয়েছে, মীরাজ পাঁড়ুইয়ের কেন্দ্র ডাঙালের একটি সাইবার ক্যাফেতে কাজ করতেন, যার মালিক কুদ্দুস। তদন্তকারীদের দাবি, এই সাইবার ক্যাফে থেকেই নকল আধার কার্ড তৈরি করে তা অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হত। এমনকি সেখানে আসা গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ও নথি জালিয়াত চক্রের হাতে তুলে দেওয়া হত বলেও সন্দেহ। শুধু তাই নয়, এসব তথ্য বিদেশে পাচার হতো বলেও গোয়েন্দাদের অনুমান।
রবিবার রাতে হাওড়া থেকে বোলপুরগামী ট্রেনে মীরাজের পিছু নেন এসটিএফের চার অফিসার। ট্রেন বর্ধমানে পৌঁছতেই তাকে আটক করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বোলপুর স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয় কুদ্দুসকে। এরপর ডাঙালের সাইবার ক্যাফেতে হানা দিয়ে আরও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে পুলিশ। পরে বোলপুরের জামবুনি এলাকার আরও একটি সাইবার ক্যাফেতে তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকেও একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়।এই ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এর আগেই গত ১০ জুন মালদার গাজোলে তিনজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেরা করে উঠে আসে, কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকে কয়েক দিনের মধ্যেই ভোটার ও আধার কার্ড সংগ্রহ করছে অনুপ্রবেশকারীরা। সেই সূত্র ধরেই চক্রের শিকড় খুঁজতে নেমেছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। ধৃত কুদ্দুসের পরিবারের দাবি, তাঁর ভাই কাউকে আধার বানিয়ে দেননি। গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতদের মোবাইল ফোন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ডিভাইস ঘেঁটে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে। অন্যদিকে, বোলপুরের জামবুনির সাইবার ক্যাফের মালিক ইমরান আহমেদ জানান, এসটিএফ তাঁর ক্যাফেতে এসে তল্লাশি চালায়। কিছুই পায়নি। তিনি তদন্তে সাহায্য করেছেন।