ঘূর্ণাবর্ত থেকে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাজ্যের একাধিক জেলায় শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি, সেই সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ। আর সেই বজ্রপাতই কেড়ে নিল ১৬ জন মানুষের প্রাণ। মৃতদের অধিকাংশই কৃষিকাজে যুক্ত ছিলেন। কেউ ধান রোপণে ব্যস্ত, কেউ আবার কাজ করছিলেন বাড়ির আশপাশে।
আরও পড়ুন: বিহারে ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাতে মৃত্যু ২১ জনের, শোক প্রকাশ নীতীশের, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা
জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়া জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। একদিনেই এখানে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। কোতুলপুর, ওন্দা, ইন্দাস, জয়পুর প্রায় প্রতিটি ব্লক থেকেই মৃত্যুর খবর মিলেছে। কোতুলপুরে জিয়াউল হক মোল্লা নামে এক কৃষক ধান রোপণ করছিলেন। সেই সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সঙ্গে ছিলেন আসপিয়া মোল্লা, তিনিও গুরুতর আহত হন। ওন্দা ব্লকে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে প্রাণ হারান নারায়ণ সাওয়ার (৪৮)। ইন্দাসে মারা গিয়েছেন ইসমাইল মণ্ডল (৬০)। জয়পুরের খড়িকাশুলি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম ভুঁইয়াও প্রাণ হারিয়েছেন বজ্রাঘাতে। এই জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বজ্রপাতের সময় মাঠে কাজ করছিলেন অনেকে, যার জেরে এত প্রাণহানি।
পূর্ব বর্ধমানেও ভয়াবহ পরিস্থিতি। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে এই জেলায়। তাঁদের মধ্যে কেউ ছিলেন কৃষি শ্রমিক, কেউ স্থানীয় জমিতে কাজ করছিলেন আত্মীয়ের হয়ে। আউশগ্রামের সঞ্জয় হেমব্রম (২৮) মাঠে ধান রোপণের সময় বজ্রাঘাতে মারা যান। মাধবডিহির সনাতন পাত্র (৬০)-ও একইভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। ভাতার ব্লকে বাজ পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও চার জন।পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের লাহিরগঞ্জ গ্রামে কৃষক লক্ষ্মীকান্ত পান (৪২)-এর মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
এদিকে, পুরুলিয়ার ঝালদা থানার অন্তর্গত গুরিডি গ্রামে সুমিত্রা মাহাতো (৪৫) নামে এক মহিলা বজ্রাঘাতে মারা গিয়েছেন। তিনিও সে সময় ছিলেন খোলা মাঠে। আরও একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের বামুনপুকুর পাড় এলাকায়। সেখানে টানা বৃষ্টির ফলে একটি পুরনো বাড়ির দেওয়াল ধসে পড়ে চাপা পড়েন অনিমা বিশ্বাস (৬০) নামে এক মহিলা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, বঙ্গোপসাগরের উপর ঘনীভূত নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী দিনেও বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।