হিন্দু ক্যালেন্ডারে প্রতি বছর ২৪টি একাদশী তিথি রয়েছে। যার মধ্যে প্রতি মাসে দুটি একাদশী আসে। প্রতিটি একাদশীর বিভিন্ন গুরুত্ব শাস্ত্রে বর্ণিত আছে। একইভাবে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীও বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই একাদশী আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী অর্থাৎ পাপনকুশী একাদশী নামে পরিচিত। বিশ্বাস করা হয় যে এই একাদশী পালন করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কথিত আছে যে এই উপবাস পালনকারী প্রাণীকে যমলোকের অত্যাচার ভোগ করতে হয় না।
একাদশী মাহাত্ম্য: ধার্মিক মান্যতা অনুসারে একাদশী ব্রত রাখলে সমস্ত রকম পাপ থেকে মুক্তি ঘটে,এর সাথে সাথে সমস্ত রকমের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। মনে করা হয় একাদশী ব্রত করলে মৃত্যুর পর মোক্ষ প্রাপ্তি ঘটে।
একাদশী পূজার সামগ্রী সূচি: শ্রীবিষ্ণুর চিত্র অথবা মূর্তি, ফুল, নারকেল, সুপারি, ফল, লবঙ্গ, ধূপ, দীপ, তুলসী দল, চন্দন, মিষ্টান্ন।
একাদশী পূজা বিধি
একাদশী তিথির হিন্দুধর্মে বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। এই একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর পদ্মনাভ রূপের পূজা করা হয়।একাদশী তিথির দিন ভগবান বিষ্ণুর বিধিবিধানের সঙ্গে পুজো করা হয়। মনে করা হয় যে এরকম করলে যেকোন রকম মনস্কামনা পূর্ণ হয়। সকালবেলায় স্নান করে শুদ্ধ বসনে দীপ জ্বালিয়ে ভগবান বিষ্ণুর গঙ্গা জল দিয়ে অভিষেক করতে হবে। ভগবান বিষ্ণুকে ফুল এবং তুলসী দল অর্পণ করতে হবে। সম্ভব হলে এই দিন ব্রত রাখা উচিত।পূজা শেষে ভগবানের আরতি করতে হবে।বিশেষ করে এই ব্রতর জন্য চাল, গম, উরদ বা মাস কলাইয়ের ডাল, ছোলা, যব এবং মসুর ডাল প্রভৃতি একাদশীর একদিন আগে থেকে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, ভগবানকে শুধু সাত্বিক জিনিসের ভোগ দেওয়া উচিত। ভগবান বিষ্ণুর ভোগে অবশ্যই তুলসী পাতা দিতে হবে। মনে করা হয় যে বিনা তুলসিতে ভগবান বিষ্ণু কোনদিনই ভোগ গ্রহণ করেন না। এইদিন ভগবান বিষ্ণুর সাথে মা লক্ষ্মীরও পুজো অবশ্যই করা উচিত এবং এই দিন যত বেশি সম্ভব ভগবানের ধ্যান করা উচিত। এই উপবাসে বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করলে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায়, এর পাশাপাশি রাত জেগে ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ করা উচিত। দ্বাদশী তিথিতে, সকালে ব্রাহ্মণদের খাদ্যশস্য দান এবং দক্ষিণা প্রদান ও অন্নভোজন করিয়ে এই উপবাসের সমাপ্তি হয়।এই উপবাসের প্রভাবে ভক্ত বৈকুণ্ঠ ধাম লাভ করেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক একাদশীর সময় সুচি।
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী ৫ অক্টোবর দুপুর ১২টা থেকে শুরু হবে, যা ৬ অক্টোবর সকাল ০৯.৪০ পর্যন্ত চলবে। উদয় তিথি অনুসারে একাদশীর উপবাস পালিত হবে ৬ অক্টোবর।